সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ১৬ অক্টোবর

primary

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ‘সহকারী শিক্ষক’ পদে নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

পরীক্ষার তারিখ: ১৬ অক্টোবর ২০১৫
পরীক্ষার সময়: সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা ২০মিনিট পর্যন্ত

কেন্দ্র: ৪৪৭টি
পরীক্ষার্থী: ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার ২৫৭ জন

জেলাসমূহ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, খুলনা, জামালপুর, নেত্রকোনা, নরসিংদী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী ও লালমনিরহাট।

প্রবেশপত্র সংগ্রহ:
০২ অক্টোবর থেকে প্রার্থীদের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে। ০৩ অক্টোবর থেকে প্রার্থীরা http://dpe.teletalk.com.bd এ ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

লক্ষ্যণীয়:
ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশনা এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য http://www.dpe.gov.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

“ডিসলাইক” বাটন চালু করতে যাচ্ছে ফেসবুক

Dislike

এতদিন ফেসবুকে কারো কোনো স্ট্যাটাস, ছবি কিংবা অন্য কোনো পোস্ট পছন্দ হলে “লাইক” বা পছন্দের অপশন ছিল। কিন্তু যখন কোনো কিছু অপছন্দ হয় তখন?  ব্যবহারকারীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এর জন্য লাইকের বিপরীতে “ডিসলাইক” বাটন চালু করতে যাচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

বুধবার ফেসবুকের প্রধান কার্যালয় থেকে এমনই ঘোষণা দিলেন প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ।

জাকারবার্গ  বলেন, “মানুষ বহু বছর ধরে ডিসলাইক বাটন সম্পর্কে আলোচনা করছে। চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা অবশেষে এটি নিয়ে কাজ করছি। বৃহত্তর স্বার্থে একটা কিছু করা হবে।”

এখন থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীরাও ডিসলাইক বাটন বা থাম্বস-ডাউন অপশন ব্যবহার করে অপছন্দ প্রকাশ করতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবে অবশ্য আগে থেকেই ডিসলাইক অপশন চালু আছে।

পোশাক খাতে সহায়তা: ২ কোটি ২০ লাখ ডলার

Garments
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা (ইউএসএআইডি) বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার উন্নয়নে ও নিরাপত্তা মানোন্নয়নে দুই কোটি ২০ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা (ইউএসএআইডি) আজকে দুটি নতুন ঋণ নিশ্চয়তা সহায়তায় স্বাক্ষর করেছে। ইউএসএআইডি, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) মধ্যকার এই বিশেষ অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের ছোট ও মাঝারি আকারের সরবরাহকারীদের জন্য সাশ্রয়ী ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ সহজলভ্য করে তুলবে যা দ্বারা উক্ত সরবরাহকারীরা তাদের শ্রমিকদের সুরক্ষার্থে ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তার মানোন্নয়ন ও কারখানার কাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করবে।
যেসব তৈরি পোশাক কারখানা অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি-র (দ্য অ্যালায়েন্স) সদস্য ব্র্যান্ডগুলোতে পোশাক সরবরাহ করে তাদেরকে প্রথম চুক্তির আওতায় এক কোটি আশি লাখ ডলার পর্যন্ত ব্যাংক ঋণের নিশ্চয়তা দেবে।  প্রাইম ব্যাংক এবং ইউসিবি এর সঙ্গে হওয়া নিশ্চয়তা অংশীদারিত্ব আরও সম্ভব হয়েছে অ্যালায়েন্স এর দেয়া পনেরো লাখ ডলারের অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতির জন্য।
যে কারখানাগুলো বাংলাদেশ অ্যাকর্ড ফর ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি (দ্য অ্যাকর্ড) এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা সমর্থিত বাংলাদেশ সরকারের ত্রিপক্ষীয় অ্যাকশন প্ল্যানের অংশ তাদেরকে দ্বিতীয় চুক্তিটি  নিশ্চয়তা দেবে চল্লিশ লাখ ডলার পর্যন্ত ব্যাংক ঋণ সহায়তা যাতে তারা অর্থায়নের সুযোগ পায়।
এই নতুন চুক্তি অনুযায়ী যোগ্যতা সম্পন্ন তৈরি পোশাক সরবরাহকারীরা টাকা ও ইউএস ডলারে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ নেওয়ার সুযোগ পাবে। এই দুটি সুবিধা একত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করবে ও তৈরি পোশাক সরবরাহকারীদের জন্য অর্থ সরবরাহ করবে এবং কারখানা শ্রমিকদের নিরাপত্তা মানন্নয়ন ও কাজের পরিবেশ উন্নয়ন ঘটাবে।

লাইসেন্স করেই পাখি পুষতে হবে!

Bird

নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বিভিন্ন ধরনের পাখি পোষা হচ্ছে সারাদেশে। শখের বসে অনেকেই পাখি পুষলেও অনেকেই আবার উৎপাদন ও বিক্রি করছে দেদারসে।

আর মাংস সুস্বাদু হওয়ার কারণে মানুষ প্রতিদিনই পাখি কিনে রান্না করে খাচ্ছে। বলতে গেলে অনেকটা বাধাহীনভাবেই।

২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন এবং জীববৈচিত্র্য আইন থাকলেও বিধিমালা না থাকায় আইন কার্যকরও হচ্ছে না ঠিকভাবে। আর এ অবস্থা দূর করে পাখি পোষার ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় প্রচলিত আইন কার্যকর করতে এর আওতায় বিধিমালা প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সম্প্রতি, জীববৈচিত্র্য ধরে রাখতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রক্ষায় ‘পোষাপাখি ব্যবস্থাপনা বিধিমালা-২০১৫’ খসড়া প্রস্তুত করেছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়। বিধিমালা প্রস্তুত করে তা মতামতের জন্য অনলাইনে প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়।

খসড়া বিধিমালায় বলা হয়, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন- ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং পোষাপাখির খামার, লালন-পালন, বেচাকেনা এবং আমদানি-রফতানির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা অতীব প্রয়োজন।

পাখি পোষার ক্ষেত্রে সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে লাইসেন্স করাসহ বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে আইন না মানলে শাস্তিরও বিধান রাখা হয়েছে বিধিমালায়।

লাইসেন্স করেই লালন-পালন
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন- ২০১২-এর খসড়া বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ব্যতীত পোষাপাখির উৎপাদন, লালন-পালন, কেনাবেচা এবং আমদানি-রফতানি করতে পারবে না।

উৎপাদন, লালন-পালন, কেনাবেচা এবং আমদানি-রফতানির জন্য প্রধান ওয়ার্ডেনের কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে লাইসেন্স করতে হবে। এক বছর পর পর লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।

পোষাপাখি কেনাবেচার ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি দিতে হবে ২ হাজার টাকা। শৌখিন পোষাপাখির লালন-পালনকারীর ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি দিতে হবে ১ হাজার টাকা। খামারির ক্ষেত্রে ৩ হাজার এবং আমদানি-রফতানি করতে লাইসেন্স ফি দিতে হবে ৫ হাজার টাকা।

লাইসেন্স বাতিল
বিধিমালা ও আইনের আওতায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে, নির্ধারিত সময়ে লাইসেন্স নবায়নের আবেদনে ব্যর্থ হলে সংক্রিয়ভাবে লাইসেন্স বাতিল হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া বিধিমালায়।

পাখি আমদানি-রফতানি
পোষাপাখির আমদানির ক্ষেত্রে আমদানিকারক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বন অধিদফতরের অনাপত্তিপত্র নিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর প্রধান ওয়ার্ডেনের  অনুমোদনক্রমে সরকার নির্ধারিত রাজস্ব ও ভ্যাট পরিশোধ করে বনসংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতিসংরক্ষক অঞ্চল অনাপত্তিপত্র জারি করবে।

এছাড়াও আমদানিকারক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে (Convention on International Trade in Endangered Species of Wild Fauna and Flora- CITES) পারমিট নিতে হবে।

শুল্ক বন্দরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োজিত পাখিবিদ এবং বন্যপ্রাণী পরিদর্শক কর্তৃক পারমিটভুক্ত পাখি শনাক্তকরণ ও ভেটেরিনারি সার্জন কর্তৃক কোয়ারেন্টাইন সার্টিটিফিকেট গ্রহণ করতে হবে। পোষাপাখি রফতানির ক্ষেত্রেও একই উপায়ে আবেদন করে অনাপত্তিপত্র ও পারমিট সাপেক্ষে রফতানি করা যাবে। তবে আমদানি করতে বাংলাদেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হবে। আর রফতানির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ঢাকার আন্তর্জাতিক হযরত (র.) শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হবে।

আইন অমান্যকারীর শাস্তি
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন- ২০১২ অমান্যকারীকে এ বিধিমালার বিধি লঙ্ঘনের কারণে ৪০ ধারায়  শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। আর অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটালে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

আরভিএন্ডএফসি, ইঞ্জিনিয়ার্স, সিগন্যালস্ ও ইএমই কোরে যোগদানের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পোষ্ট করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (Bangladesh Army)। আবেদনের শেষ তারিখ অক্টোবর ২২, ২০১৫।

আসুন দেখে নেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (www.joinbangladesharmy.mil.bd)-এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি (ছবিতে ক্লিক করুন বড় ভিউয়ের জন্য:)-

Army

অপার সম্ভাবনাময় রত্নগর্ভা সোনাদিয়া দ্বীপ (ভিডিওসহ)

Sonadia

-মোহাম্মদ সিরাজুল হক সিরাজ মহেশখালী (কক্সবাজার)

মহেশখালীর অপার সম্ভাবনাময় সোনাদিয়া দ্বীপ। এই দ্বীপের নামকরণের সঠিক কোনো ঐতিহাসিক তথ্য না থাকলেও জনশ্রুতি রয়েছে, স্থানীয়দের কাছে সোনা সমতুল্য দামি পণ্য প্রচুর মৎস্যসম্পদ আহরিত হতো বলে এই দ্বীপ সোনার দ্বীপ তথা সোনাদিয়া বলে পরিচিতি লাভ করে। দ্বীপটি সোনাদিয়া হিসেবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে এবং পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে। পর্যটনের জন্য সম্ভাবনাময় সোনাদিয়া পরিকল্পিত উন্নয়নের অভাবে এখন মুখথুবড়ে পড়েছে। শীত মওসুমে কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সোনাদিয়া হলেও এখন পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে এই দ্বীপ। ফলে পর্যটনকে ঘিরে সোনাদিয়ায় গড়ে ওঠা ব্যবসাপাতি অচল হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের একটি আকর্ষণীয় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সোনাদিয়ায় ৪৯২৮ হেক্টর জমি রয়েছে। পূর্ব-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সাথে প্রতিনিয়ত মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয় সোনাদিয়া দ্বীপের বাসিন্দাদের। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ দ্বীপের দৃষ্টিনন্দন প্যারাবন জমির পরিমাণ প্রায় ২২০০ একর। এ ছাড়া রয়েছে নৈসর্গিক সমুদ্র সৈকত।
কুতুবজোম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদুল গফুর প্রকাশ নাগু মেম্বার জানিয়েছেন, অসংখ্য লাল কাঁকড়া রয়েছে সোনাদিয়া দ্বীপে। এসব কাঁকড়া পূর্ব পাশে জেগে ওঠা চর সোনাদিয়ার আকর্ষণ বাড়িয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কাছিমসহ দ্বীপবাসীর নিজস্ব সংস্কৃতি ও সাদামাটা জীবনযাপন সবাইকে আকৃষ্ট করে। পূর্ব পাড়ার হজরত মারহা আউলিয়ার মাজার ও তার আদি ইতিহাস, জেলেদের সাগরের মাছ ধরার দৃশ্য, সূর্যাস্তের দৃশ্য, প্যারাবন বেষ্টিত আঁকাবাঁকা নদীপথে নৌকা ভ্রমণ, স্পিড বোট বা ইঞ্জিন বোট দিয়ে মহেশখালী চ্যানেল হয়ে সাগরের মাঝপথে বঙ্গোপসাগরের দৃশ্য অবলোকন পর্যটকদের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী বাড়তি আকর্ষণ। তবে এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এ দ্বীপে সরকারি বা বেসরকারিভাবে পর্যটন শিল্প বিকাশে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করা হলে পর্যটন শিল্পে অবদান রাখতে পারবে দ্বীপটি। কক্সবাজার শহরের নিকটবর্তী দ্বীপটি পর্যটন বিকাশে অন্যতম স্থান হতে পারে যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে সচেতন মহলের অভিমত। কুতুবজোম ইউনিয়নের বাসিন্দা খাইরুল আওয়ারা জানান, প্রতি মওসুমে বিপুল পর্যটক সোনাদিয়ায় আসতেন। পর্যটকদের কেউ স্পিড বোটে করে, কেউবা আসতেন মহেশখালীর কুতুবজোম হয়ে সড়কপথে। পর্যটকদের ঘিরে গড়ে ওঠে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বর্তমানে পর্যটক আসা শূন্যের কোঠায় চলে আসায় ওই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
পরিবেশবিদদের মতে : সোনাদিয়া দ্বীপ সরকার ঘোষিত পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এ দ্বীপে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ। এই দ্বীপে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে ইকো ট্যুরিজমের উন্নয়ন বিকাশ অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এই দ্বীপে দ্বীপবাসীর সম্পৃক্ততায় কমিউনিটিভিত্তিক ইকো ট্যুরিজমের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে; যা দ্বীপবাসীর বিকল্প আয়ের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
সোনাদিয়ায় লোকসংখ্যা : বর্তমানে ৮১০ জন বাস করেন সোনাদিয়ায়। ২০১২ সালের তথ্য অনুযায়ী ভোটারসংখ্যা ৩৮৪ জন। স্থানীয় লোকজন মূলত মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিছু পরিবার চিংড়ি ও লবণ উৎপাদন পেশায় জড়িত আছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও খুবই পরিশ্রমী। পুরুষেরা চিংড়ি ও সমুদ্রে গিয়ে মাছ আহরণে ব্যস্ত থাকলেও মেয়েরা পুরুষদের আহরিত মাছগুলো বাজারজাতকরণের যাবতীয় কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। মাছ শুকানো ও গুদামজাত সম্পন্ন করেন নারীরাই। বিশেষ করে শীত মওসুমে শুকানো বিভিন্ন প্রজাতির শুঁটকি মাছ দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়। তাই কক্সবাজারে পর্যটনে আসা কোনো পর্যটকই সোনাদিয়ার শুঁটকি ছাড়া ঘরে ফিরতে চান না।
সোনাদিয়ায় শিক্ষাব্যবস্থা : সোনাদিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা তেমন কোনো উল্লেখ করার মতো নয়, তবে পশ্চিম পাড়া আর উত্তর পাড়ায় একটি করে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান তেমন ভালো নয়। স্থানীয় লোকজন ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোলেই মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় লেখাপড়া থামিয়ে দিতে হয়।
দৃষ্টিনন্দন প্যারাবন : সোনাদিয়ার প্যারাবন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের একমাত্র লোনাজলের প্যারাবন। পূর্ব পাশে মহেশখালী চ্যানেল এবং পশ্চিমে কোহেলিয়া নদী। এ অঞ্চলে সাদা বাইন, কালো বাইন, কেওড়া, হরগোজা, নোনিয়াসহ প্রায় ত্রিশ প্রজাতির প্যারবনসমৃদ্ধ উদ্ভিদ বিদ্যমান।
জীববৈচিত্র্য : পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সোনাদিয়ার খাল, মোহনা, চর ও বন ভূমিতে উনিশ প্রজাতির চিংড়ি, চৌদ্দ প্রজাতির শামুক, ঝিনুক, নানা ধরনের কাঁকড়ার মধ্যে রয়েছে রাজ কাঁকড়া, হাব্বা কাঁকড়া, জাহাজি কাঁকড়া, সাঁতারো কাঁকড়াসহ প্রায় আশি প্রজাতির সাদা মাছ, পঁয়ষট্টি প্রজাতির (বিপন্নপ্রায়) স্থানীয় ও যাযাবর পাখি এবং অন্তত তিন প্রজাতির ডলফিন বিচরণ করে থাকে। বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের মধ্যে কোরাল, বোল, বাটা, তাইল্লা, দাতিনা, কাউন (কনর মাছ) ও প্যারাবন এলাকার অন্যান্য মাছ পাওয়া যায়। এই দ্বীপে উৎপাদন করা হয় এক প্রকার সাগরের বুকে ভেসে আসা চরে কত্তাল। ওই কত্তালের পেট থেকে মুক্তা পাওয়া যায় এই রত্নগর্ভা সোনাদিয়া দ্বীপে।

ভিডিও দেখুন এখানে: Sonadia Island

পরিবেশবিদ হিসেবে হজরত মুহাম্মদ সা:

Save World

সারিয়া ইসলাম

পরিবেশের জন্য কাজ করে, এমন একটি সংগঠনের তৈরি, একটি বিজ্ঞাপনে একটি শিশু সিলের ছবি রয়েছে যার দেহ রক্তে রঞ্জিত। শ্বেত শুভ্র বরফের পটভূমিতে এই রক্তের উজ্জ্বল লাল রঙ মানুষের নিষ্ঠুর কাণ্ডজ্ঞানহীনতার নগ্ন নজির।
সিল শিশুটির সুন্দর নীলচে কালো চোখ দুটোতে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের জন্য নীরব আবেদন মূর্ত হয়ে উঠেছে। তবে মনে হয়, এই আবেদন জানানো হয়েছে খুব দেরিতে। কারণ, সিল শাবকটি এর মধ্যে মারা গেছে। তার চোখের আকুতি দর্শককে মন্ত্রমুগ্ধ না করে পারে না। ছোট্ট সিলটি একটি বড় আবেদন জানাচ্ছে। এই আবেদনের তাৎপর্য তার নিজের প্রাণহানির চেয়ে বড়। যারা এর জীবন নিয়েছে, তাদের কারো হৃদয়কে কি এ ঘটনা স্পর্শ করতে পারে? আমার ধারণা, মানুষের দাবি-দাওয়ার সোচ্চার কণ্ঠস্বর সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মানুষ দাবি জানাচ্ছে প্রাণীর বেপরোয়া ও কাণ্ডজ্ঞানহীন শিকার ও হত্যা নিষিদ্ধ করার জন্য। তাদের দাবি, এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
হতে পারে, নীরব সিল শিশু তার মনের কথাটি প্রকাশ করতে পেরেছে এবং এর ফলে কিছু প্রাণী নিরাপদে জীবন কাটাতে সক্ষম হবে।
আল গোরের প্রামান্য চলচ্চিত্র ‘একটি অসুবিধাজনক সত্য’। এই সুন্দর গ্রহের প্রতি চরম খামখেয়ালির মাধ্যমে মানবজাতি যে বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়েছে, তা চলচ্চিত্রটিতে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, এতে আমাদের মনে তোলপাড় না হয়ে পারে না।

প্রাকৃতিক ব্যবস্থাগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বাতাস, পানি, এমনকি যে মাটিতে আমরা খাদ্য উৎপাদন করি সব জায়গাতেই দূষণ। বনগুলো হারিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। সুন্দর সুন্দর পাখিসহ প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আর এখন আমাদের যে ‘ফুড চেইন’ আছে, তার যোগসূত্র মাঝে মাঝে বিচ্ছিন্ন।

পরিবেশ দূষিত ও বিপন্ন হওয়ার এমন তালিকা এত দীর্ঘ যে, তা বিরক্তিকর ঠেকতে পারে। এই তালিকা ভ্রান্তি ও স্বার্থপরতার অশেষ খতিয়ান। এর পরিণামে যে দুষ্টচক্রের উদ্ভব ঘটেছে, সেটি পুরোদমে ফিরে আসবে ওই সব প্রজাতিরও দোরগোড়ায় যেগুলোর জন্মদাতা মানুষের এই সংকীর্ণ স্বার্থ। এসব আত্মবিধ্বংসী কার্যকলাপের উপলব্ধি মানুষকে প্রকৃতির ব্যাপারে সচেতন ও সুবিবেচক করে তুলছে।
পরিবেশগত অনেক সমস্যার সমাধান অসম্ভব। তবে ক্ষতির মাত্রা কমানো যায় এবং তা করা হচ্ছেও। ‘সবুজ আন্দোলন’ গতিবেগ পাচ্ছে। মানুষের নিজের কর্মফল হিসেবে পরিবেশে যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, সারাবিশ্বে সে সম্পর্কে সৃষ্টি হচ্ছে সচেতনতা। জনগণ সভা-সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে; রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পাঠাচ্ছে ই-মেইল। ‘আসুন, গ্রহটাকে বাঁচাই’ শীর্ষক প্রচারণা কোনো হালকা বিষয় নয়।
ভারসাম্য সৃষ্টি করা
পরিবেশের ব্যাপারে উদ্বেগ ও পরিচর্যা মহানবী মুহাম্মদ সা:-এরও শিক্ষা। তাই এটা সব মুসলমানের দায়িত্ব।
হজরত মুহাম্মদ সা: মানব জাতিকে এমন এক আদর্শের দিকে পরিচালিত করেছিলেন, যেখানে মানুষের উন্নয়নের জন্য ন্যায়বিচার, উদারতা ও সুশাসন অপরিহার্য। তাই, মানবসমাজের অগ্রগতি অবশ্যই এমন হওয়া উচিত যাতে পুরুষ, নারী, প্রাণী, প্রকৃতি সবার প্রতি সুবিচার হয় নিশ্চিত।
রাসূল সা: মানুষকে উৎসাহিত করেছেন সরল জীবনযাপনের জন্য। তাঁর এই বৈশিষ্ট্য পরিবেশবান্ধব হওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের জন্য একটি উত্তম উদাহরণ। আর এভাবে জীবনযাপনের মানে হলো, এমন সব বুলিবচনের কল্পনাবিলাস কিংবা জটিল-কঠিন আঁচপ্যাঁচের কারিগরি ব্যাপার-স্যাপার থাকবে না যা হয়তো জ্বালানি বাঁচাতে পারে, তবে পৃথিবীর প্রাণ হবে ওষ্ঠাগত। এমন অনেক সমস্যা আছে যেগুলো অতীতে এড়িয়ে চলা যেত। বর্তমানে তা সম্ভব না হলেও কমপক্ষে সেসব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এগুলোর সহজ ও বাস্তব সমাধানই আমাদের খোঁজা উচিত।
পরিবেশের সাথে মানুষের সম্পর্কের ব্যাখ্য দেয়ার ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সা: তিনটি বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ক. বিনয় জগতের সব সৃষ্ট বস্তুই আল্লাহর বলে উপলব্ধি করা; খ. ন্যায়বিচার মানুষের সব কাজ সংশ্লিষ্ট সবার ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও ন্যায়ভিত্তিক হতে হবে; গ. স্থায়িত্ব সর্ববিধ অপচয়-আধিক্য পরিহার করা এবং প্রাকৃতিক ও অন্য যেকোনো ধরনের সম্পদের সঠিক ও পরিমিত ব্যবহার।
এই বিশ্বজগত আল্লাহতায়ালাই সৃষ্টি করেছেন। আজো হয়তো সৃষ্টি জগতের অনেক কিছুই অনাবিষ্কৃত। সেসবও সৃষ্টি করেছেন আল্লাহই। সৃষ্টিজগত তাঁর শক্তি, ক্ষমতা ও কুদরতের নিদর্শন। এর কোনোকিছুই মানুষের তৈরি নয়। বরং আল্লাহ দয়া করে মানুষকে সবকিছু দিয়েছেন। তাই সৃষ্টিজগতের সবকিছুর মর্যাদা দিতে হবে এবং সব ক্ষেত্রেই অবলম্বন করতে হবে ন্যায়নীতি।
যদি এই উপলব্ধি আমাদের চিন্তাচেতনায়, দৃষ্টিভঙ্গিতে ও কাজকর্মে প্রোথিত হয়ে যায়, তাহলে আমরা আরো অগ্রসর হয়ে অনুধাবন করতে পারি সৃষ্টির মর্যাদা দিয়ে কীভাবে আমাদের সব কাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায়।
আল কুরআন অনুসারে, মানুষ এই জগতে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতিনিধি এবং পৃথিবীর উত্তরাধিকারী। আল্লাহ বলছেন, ‘তিনিই তোমাদেরকে তাঁর প্রতিনিধি, পৃথিবীর উত্তরাধিকারী বানিয়েছেন’ (সূরা আল আনআম, আয়াত-১৬৫)।
একজন প্রতিনিধির ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব থাকে। একই সাথে, তার দায়িত্ব আছে সব প্রাণীর প্রতি যাদের ওপর তাকে কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে। এটা এমন এক ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা যাতে মানুষ ও প্রাণীর মধ্যকার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মানুষ প্রকৃতির সাথে বিবেকসম্মত আচরণ করবে এবং সংশ্লিষ্ট যেকোনো সাফল্য ও অর্জন হতে হবে টেকসই।
আল্লাহতায়ালা কুরআন শরীফে বলছেন, ‘আর আসমান, তিনি এটাকে উচ্চে তুলেছেন এবং তিনি সৃষ্টি করেছেন ভারসাম্য’ (আর রাহমান, আয়াত নং-৭)
রাসূলে করীম সা: বলেছেন, এই পৃথিবী সুন্দর ও সবুজ এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে এখানে পাঠিয়েছেন প্রতিনিধিরূপে, যাতে তোমরা কেমন কাজ করো, তা তিনি দেখতে পারেন… (মুসলিম)।
অতএব, মানুষের দায়িত্বের সাথে আছে তার পরীক্ষা। এটা এমন এক কর্তব্য যা হলো যাবতীয় কাজকর্ম সুষ্ঠু-সঠিক ও প্রশংসনীয় হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করা। এই কাঠামোর আওতায় অনুসন্ধান ও অনুধাবন করা যায় পরিবেশের যত্ন নেয়ার জন্য রাসূল মুহাম্মদ সা:-এর দর্শনকে।
জীবনধারণের উপায়-উপকরণগুলো সর্বশক্তিমান আল্লাহর দেয়া নিয়ামত বা আশীর্বাদ। আমরা যে পানি পান করি আর যে বাতাসে শ্বাস নিই তা এর দৃষ্টান্ত। কারণ পানির স্বাদ তো তিক্তও হতে পারতো। আর বাতাস হতে পারতো বিষাক্ত ধোঁয়া যাতে শ্বাস নেয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতো।
এসব প্রাকৃতিক সম্পদসমেত সবকিছু অবশ্যই পরিমিতভাবে ব্যবহার করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগুলো হতে হবে টেকসই। তাহলে আমাদের উত্তরপুরুষের ব্যবহারের স্বার্থে পর্যাপ্ত সম্পদ রেখে যাওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে।
প্রাণীর প্রতি সদাচরণ
পশুপাখিরও সমাজ আছে মানুষের মতো। এদেরকেও সম্মিলিতভাবে আল্লাহর কাছে হাজির করা হবে। তাদের প্রতি যে কোনোরকম দুর্ব্যবহারের হিসাব নেয়া হবে। ওদের প্রতি যেকোনো প্রকার দয়ার জন্য রয়েছে প্রতিফল। মহানবী সা: বলেছেন, যারা দয়ালু, তাদের প্রতি সেই মহাদয়াবান সত্তা দয়া করবেন। যারা আছে এই পৃথিবীতে, তাদের প্রতি তোমরা দয়া দেখালে আল্লাহ তোমাদের প্রতি করুণা প্রদর্শন করবেন (আত্ তিরমিযী)।
কোনো পশুপাখি বা প্রাণীকে বিনা প্রয়োজনে হত্যা করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন, সে প্রাণী যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন। মানুষের সঙ্গত ব্যবহারের জন্য প্রাণী হত্যা করা যেতে পারে। কিন্তু নিছক তামাশার বশে শিকার করা কাণ্ডজ্ঞানহীনদের অন্যায় কাজ মাত্র। যদি ন্যায়নীতি মেনে চলা হতো, তাহলে এই লেখার শুরুতে উল্লিখিত শিশু সিলটির জীবন রক্ষা পেতো বৈ কি।
খেলা বা বিনোদনের নামে পশুপাখিকে উত্তেজিত করা বা উসকিয়ে দেয়ার পরিণামে ওরা আঘাত ও ব্যথা পায়। তাই এমন কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন রাসূল সা:। ‘ম্যাটাডোর’ ষাঁড়কে উত্তেজিত করে তোলে এবং বোকার মতো নিষ্ফলা ধাওয়া করতে বাধ্য করে। শেষ পর্যন্ত ষাঁড়টির মৃত্যু ঘটে। তাই ম্যাটাডোর ওই সব লোকজনের মতোই নিষ্ঠুর যারা রাস্তায় কোনো ষাঁড়কে তাড়াতে থাকে।
এ জাতীয় কাজ ও আচরণ একটি পশুকে তার প্রাপ্য অধিকার ও গুরুত্ব থেকে বঞ্চিত করে। পরিবেশ সচেতন বিশ্বে এসব কাজের কোনো স্থান নেই। জানা যায়, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর রা:-এর পুত্র ইবনে উমর কয়েকটি ছেলে একটি মুরগি ছানাকে লক্ষ্য করে ‘টার্গেট প্র্যাকটিস’ করছে দেখে তাদের থামিয়ে দিয়েছিলেন।
গৃহপালিত পশুপাখি বা প্রাণীর সাথে রাসূল সা:-এর আচরণের ভিত্তি ছিল দয়া। তিনি বর্ণনা করেছেন এমন কয়েকটি ঘটনা, যা থেকে জানা গেছে, প্রাণীর প্রতি সামান্য দয়া দেখানোর কারণে পাখীরাও আল্লাহর ক্ষমা লাভ করেছে। অপর দিকে, প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতার দায়ে শাস্তি হিসেবে দোজখে গেছে, এমন লোকদের কাহিনীও বর্ণিত হয়েছে।
মহানবী সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি গাধার গায়ে গরম কিছু দিয়ে দাগ দেয়, তাকে আল্লাহ যেন শাস্তি দেন (মুসলিম)। নিজ আওতাভুক্ত প্রাণীকে বন্দী করে রাখলে গুনাহগার হতে হবে।
রেওয়ায়েত থেকে জানা যায়, রাসূল সা:-এর কয়েকজন সাহাবি একটি পাখির কয়েকটি ছানা ধরেছিলেন। ক্রুদ্ধ হয়ে মা পাখি তার দু’পাখা ছড়িয়ে ছানাগুলোকে ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করছিল। এটা দেখে রাসূল সা: বললেন, ‘কে বাচ্চাগুলোকে ছিনিয়ে নিয়ে পাখিটিকে কষ্ট দিলো? তাকে সেগুলো ফিরিয়ে দাও’ (আবু দাউদ)।
পরিশেষে, বৃক্ষের জন্য রাসূল সা:-এর মমতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরা সমীচীন হবে। তিনি বলেছেন, ঈমানদারদের মধ্যে এমন কেউ নেই যিনি একটি গাছের চারা রোপণ করলেন, অথবা বপন করলেন একটি বীজ; তারপর কোনো পাখি, মানুষ কিংবা পশু সে গাছের ফল খেলো, আর তা দান হিসেবে গণ্য হলো না (বুখারী)।
রাসূলুল্লাহ সা: যুদ্ধের সময়ে বৃক্ষসম্পদ ধ্বংস করতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, ‘যদি তুমি একটি বৃক্ষ রোপণের কাজে ব্যস্ত থাকো, আর পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মতো মারাত্মক কোনো ঘটনা আপতিত হয়, তবুও তোমার সে কাজ চালিয়ে যাবে।’
রাসূল সা:-এর পথ এটাই। সে পথে চলতে গেলে মানবজাতি অন্যান্য সৃষ্টিকে সম্মান করতে হবে, যাদের সাথে শরিকানায় আমরা বাস করছি এই গ্রহটিতে।

লেখিকা : ভারতীয় এই মহিলা ১৩ বছর আগে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন। ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়েছেন। অভিজ্ঞ মানবসম্পদ পেশাজীবী। বর্তমানে ‘মুসলিম নারী ও একাত্মকরণ’ বিষয়ে ডক্টরেট করছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন দাওয়াহ ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমকে পেশা হিসেবে নেয়ার।
ভাষান্তর : মীযানুল করীম

ফরাসি নও মুসলিম লায়লা হোসাইন (ভিডিওসহ)

Leyla Hussain

ফরাসি নও-মুসলিম লায়লা হোসাইনের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কাহিনী তুলে ধরব। পূর্ণাঙ্গ ও সর্বশেষ ঐশী ধর্মইসলামের আলোকিত বিধি-বিধান, বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং নানা প্রথা যুগ যুগ ধরে সত্য-সন্ধানী বহু অমুসলিম চিন্তাশীল মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। যেমন, জ্ঞান-চর্চার ওপর ইসলামের ব্যাপক গুরুত্ব আরোপ অনেক অমুসলিম গবেষককে অভিভূত করেছে। ইসলামী হিজাব বা শালীন পোশাক তথা পর্দার বিধানও আকৃষ্ট করে আসছে অমুসলিম নারী সমাজকে। ফরাসি নারী লায়লা হোসাইনও তাদের মধ্যে অন্যতম।

পাশ্চাত্যের বঞ্চিত ও প্রতারিত নারী সমাজ ইসলামী শালীন পোশাকের মধ্যে প্রশান্তি, নিরাপত্তা ও পবিত্রতা খুঁজে পাচ্ছেন। পাশ্চাত্যের অনেক নারীই সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, তারা এই পশ্চিমা ভূবনে মুসলিম মহিলাদের হিজাব দেখেই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়েছেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তারা বলেছেন, আমরা হিজাবের মধ্যে সত্যিকারের সুখ, প্রশান্তি ও নিরাপত্তা অনুভব করছি। ইসলামী হিজাবের এই প্রভাবের কারণে পশ্চিমা সরকারগুলো নানা অজুহাতে হিজাব পরিহিতা নারীদের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করছে। এ ছাড়াও এসব সরকার পর্দানশীন নারীদেরকে একঘরে করার ও দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে

ফরাসি নও-মুসলিম লায়লা হোসাইন ছিলেন একজন ইহুদি। ” আহলুল বাইত” টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, হিজাবের সৌন্দর্য দেখেই তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং বেছে নিয়েছেন পরিপূর্ণ হিজাব। লায়লা হোসাইন বলেছেন, ” মুসলমানদের সম্পর্কে সব সময়ই এক ধরণের বীতশ্রদ্ধা ছিল আমার মধ্যে। আমি এভাবেই বড় হয়েছি। কিন্তু আমি সব সময়ই হিজাব পরা মুসলিম নারীদের প্রতি আকৃষ্ট ছিলাম। তাদের পবিত্রতা ও বিনম্রতা আমাকে মুগ্ধ করত। আমার দৃষ্টিতে তাদের রয়েছে এক ধরণের নিজস্ব সৌন্দর্য। আমি ইহুদি সমাজের সদস্য হওয়ায় ইসলামী হিজাব রপ্ত বা আয়ত্ত্ব করা আমার জন্য কঠিন কাজ ছিল না। কিন্তু ঈমান বা বিশ্বাস সম্পর্কে মানুষের ধারণাগুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। তারা (অর্থাৎ ইহুদিরা) মুসলিম মহিলাদের চেয়ে ইহুদি মহিলাদেরকেই বেশি শ্রদ্ধা করত।”

ইসলামের অন্য অনেক সৌন্দর্য গবেষণার মাধ্যমে স্পষ্ট হয় লায়লা হোসাইনের কাছে। পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধিতে তাকে সহায়তা করেছে। তিনি বলেছেন, ” কোরআন ছিল আমার প্রথম অনুপ্রেরণা। যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ আমি পেয়েছি তা থেকে বুঝতে পেরেছি যে, ইসলাম সত্য ও খাঁটি ধর্ম। কারণ, এ ধর্ম সব নবী-রাসূলকেই শ্রদ্ধা করে। আর আমার দৃষ্টিতেও এটা খুবই যৌক্তিক। ধীরে ধীরে আমার কাছে এটা স্পষ্ট হয় যে ইসলামের শুধু বাহ্যিক দিক নয়, আছে অভ্যন্তরীণ দিকও। তাই ভেতর থেকেও ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।”

ইসলামে মানুষের আত্মা ও দেহ- উভয়ই গুরুত্ব পেয়েছে। প্রকৃত মুসলমান হওয়ার জন্য ইসলামী বিশ্বাসের শুধু মৌখিক স্বীকৃতি ও বাহ্যিক আচার-আচরণ বা ইবাদতই যথেষ্ট নয়। মন বা হৃদয়ের গভীরে ইসলাম কতটা স্থান করে নিয়েছে-লায়লা হোসাইনের মতে তাও গুরুত্বপূর্ণ।

পশ্চিমা সরকারগুলো ইসলাম সম্পর্কে সঠিক চিত্র তুলে না ধরায় নও-মুসলিমরা অনেক সমস্যার শিকার হন। কিন্তু ইসলামের সৌন্দর্য ও বাস্তবতা নওমুসলিমদের কাছে এতই হৃদয়গ্রাহী যে সব ধরনের কঠোরতা, ক্লেশ ও বাধা-বিঘ্ন সহ্য করা তাদের জন্য সহজ হয়ে পড়ে।

লায়লা হোসাইন এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ” হিজাব পরার মাধ্যমে আমি নিজেকে অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছি-এই ভেবে আমার পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। কারণ, ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ। স্কার্ফ বা ওড়না মাথায় দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যাওয়া এ দেশে নিষিদ্ধ, ফলে হিজাবধারীকে সামাজিক অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হয়। শুধু বিশেষ পোশাক পরার কারণে আমি আমার সামাজিক জীবনকে বিপদাপন্ন করেছি বলে আমার পরিবার মনে করত। এ অবস্থা মেনে নেয়া তাদের জন্য খুবই কষ্টকর ছিল। তারা মনে করত আমি আমার মুসলমান হওয়ার বিষয়টি হিজাবের মাধ্যমে প্রকাশ না করলেই ভাল হত। ইসলামের প্রতি আমার বিশ্বাস কেবল মনের মধ্যে লালন করলেই তা যথেষ্ট হত বলে তারা মনে করত। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পবিত্র কোরআনে ও রাসূল (সা.)’র অনেক হাদিসে বা সুন্নাতে হিজাবের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মুসলিম পরিচয়ের জন্যেও যে তা জরুরি তা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছ কোরআন-হাদিসে। তাই হিজাব পরিত্যাগ করতে রাজি হইনি আমি। আমার কাছে হিজাব শুধু হাত ও মাথা ঢাকার বিষয় নয়, বরং এর চেয়েও বড় কিছু।”

ইসলামের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে অনেক ইহুদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছেন। এ ধরনের ঘটনা দিনকে দিন বাড়ছে। কিন্তু বর্তমান যুগে প্রচলিত ইহুদি ধর্ম (যা আসলে আদি বা অকৃত্রিম ইহুদি ধর্ম নয়) অনুযায়ী এ ধর্ম ত্যাগ করা যায় না। ফলে নও-মুসলিম ইহুদিরা অনেক সমস্যার শিকার হচ্ছেন। তাসুয়ি ইহুদা লাভ নামের একজন ইহুদি পুরোহিত বলেছেন, ইহুদির মেয়েরা অন্য ধর্ম গ্রহণেরও পরও ইহুদি থেকে যায়। কারণ, ইহুদি ধর্ম অনুযায়ী, ইহুদি মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া ইহুদি অন্য ধর্ম গ্রহণ করার পরও ইহুদি থেকে যায়।

এ ছাড়াও বিশ্বের ইহুদিদের অভিভাবক হওয়ার দাবিদার দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনের বাইরে ইহুদিদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ ঠেকানোর জন্য ব্যাপক ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ নিয়েছে। তা সত্ত্বেও ইসরাইলি দৈনিক মারিভ সম্প্রতি লিখেছে, “ইসরাইলের ভেতরেই প্রতি বছর শত শত ইহুদি নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ধর্মীয় পরিচয় পরিবর্তনের ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য ইসরাইলি বিচার-বিভাগের কাছে আবেদন জানাচ্ছে। ইসরাইলি ইহুদিদের মধ্যে এ ধরনের আবেদনের সংখ্যা ২০০৮ সালে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।”আবার অনেক ইহুদি ধর্ম পরিবর্তন সংক্রান্ত এ ধরনের আবেদন করছেন না, কিংবা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে গেলে যেসব সীমাবদ্ধতা ও হয়রানির শিকার হতে হবে তা এড়ানোর জন্য এ পবিত্র ধর্ম গ্রহণের কথা প্রকাশ করছেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞ ও সহিংসতা এবং ইহুদিবাদীদের হাতে তাদের সম্পদ দখল ও লুণ্ঠনের ঘটনাগুলো অধিকৃত ফিলিস্তিনে আসা ইহুদিদেরকে বিকৃত হয়ে পড়া ইহুদি ধর্ম ত্যাগের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে।

ইহুদিদের মধ্যে অন্য ধর্ম গ্রহণের প্রবণতা বাড়তে থাকায়, বিশেষ করে ইসলামের আকর্ষণ তাদের মাঝে বাড়তে থাকায় ইহুদিবাদী ইসরাইল অ-ইহুদি বিয়ে করাকে ইহুদি যুব সমাজের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবেনিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।অ-ইহুদি স্বামী বা স্ত্রীর প্রভাবে ইহুদি যুব সমাজ নিজ ধর্ম ত্যাগ করছে বলেইইসরাইল তা ঠেকাতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইহুদিবাদী রাজনৈতিক নেতা আভরি আভরবাখ বলেছেন, প্রত্যেক ইহুদির নিজ ধর্ম ত্যাগের ঘটনা ইহুদি গ্রুপগুলোর জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক ক্ষতি বয়ে আনছে। কিন্তু লায়লা হোসাইনের মতে, সত্য ধর্ম তার স্বচ্ছতা ও স্পষ্ট নানা শিক্ষার কারণেই মানুষের অন্তর জয় করছে এবং জীবন, ভালবাসা ও বিশ্বাসের প্রকৃত অর্থ তুলে ধরছে। পবিত্র কোরআনেআল্লাহ বলেছেন, “তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।”

ভিডিও দেখুন এখানে: From Judaism to Islam – Wearing Hijab – Leyla Hussain & Zahra Al-Alawi FULL INTERVIEW

সকালে পানি খাওয়ার গুন

Water

সকালে পানি পান আপনাকে রাখবে সতেজ ও রোগমুক্ত। সকালে পানি পানের পর অল্প কিছুক্ষণ অন্য কিছু না খাওয়াই ভালো। এই পানি-চিকিত্সার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং এটা পরিপাক ক্রিয়ার জন্য দারুণ উপকারী।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু এটা ঠিক কী কী উপকারে আসে আর তার সুফল কেমন করে পাওয়া যায়, তা হয়তো অনেকেরই অজানা। অল্প কিছু বিষয় মেনে চললেই সকালে খালি পেটে পানি পান করে সুস্থ-সবল থাকার পথে একধাপ এগিয়ে থাকা সম্ভব। ভালো হজমশক্তি আপনা থেকেই অনেকগুলো স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে উপকারে আসে। সকালে পানি খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা:
• পর্যাপ্ত পানি পানে শরীরের ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর থাকে। রক্ত থেকে ‘টক্সিন’ বা বিষাক্ত নানা উপাদান দূর করে পানি।
• সকালে পানি পানে শুধু পাকস্থলীই পরিষ্কার হয় না, এটা অনেকগুলো রোগের ঝুঁকি থেকে আমাদের বাঁচতে সহায়তা করে।
• এই অভ্যাস মলাশয়কে ঠিকঠাক ও সচল রাখতে সহায়তা করে এবং পরিপাকক্রিয়া থেকে সঠিকভাবে নানা পুষ্টি উপাদান গ্রহণে শরীরকে সাহায্য করে।
• শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই পানি। কেননা, পানি নতুন রক্ত কোষ এবং পেশি কোষ জন্মানোর প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। আর ওজন কমিয়ে রাখতেও উপকারী পর্যাপ্ত পানি পান।
• সকালে পানি পানের পর অল্প কিছুক্ষণ অন্য কিছু না খাওয়াই ভালো। এই জল-চিকিত্সার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই এবং এটা পরিপাক ক্রিয়ার জন্য দারুণ উপকারী।
• প্রতিদিন সকালে গড়ে চার গ্লাস পানি (প্রায় এক লিটার) পান করা স্বাস্থ্যের খুবই ভালো। প্রথম দিকে এটা অনেক বেশি মনে হলেও কিছুদিন এভাবে পানি পান করলে বিষয়টা সহজেই আয়ত্ত হয়ে যাবে এবং এর উপকারিতাও টের পাওয়া যাবে।
• সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটা এক ধরণের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা যা হাঁপানি, ব্যথা এমন কি ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়।
• সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি খেয়ে নিন। পানি খাওয়ার এক ঘন্টা পর নাস্তা করুন। মনে রাখবেন, সকালে পানির বদলে জুস বা অন্য পানীয় না খাওয়াই শরীরের জন্য ভালো।
• সকালে প্রতিদিন খালি পেটে পানি খেলে রক্তের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়।
• রাতে ঘুমানোর ফলে দীর্ঘ সময় ধরে হজম প্রক্রিয়ার তেমন কোনো কাজ থাকে না। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করার জন্য অন্তত এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয়া উচিত।
• প্রতিদিন সকালে নাস্তার আগে এক গ্লাস পানি খেলে নতুন মাংসপেশী ও কোষ গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
• প্রতিদিন সকালে অন্তত ১৬ আউন্স হালকা গরম পানি খেলে শরীরের মেটাবলিসম ২৪% বেড়ে যায় এবং শরীরের ওজন কমে।
• প্রতিদিন খালি পেটে এক গ্লাস করে পানি খেলে মলাশয় পরিষ্কার হয়ে যায় এবং শরীর নতুন করে খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে সহজেই।
• প্রতিদিন সকালে মাত্র এক গ্লাস পানি খেলে বমি ভাব, গলার সমস্যা, মাসিকের সমস্যা, ডায়রিয়া, কিডনির সমস্যা, আর্থাইটিস, মাথা ব্যাথা ইত্যাদি অসুখ কমাতে সহায়তা করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়

Presure

উচ্চ রক্তচাপ সুস্থ শরীরের জন্য একেবারে আদর্শ নয়। যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ধরা পড়ে, তাহলে যেকোনও উপায়েই হোক সেটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক কারণ তা হার্টের নানা অসুখের মুখ্য কারণ হতে পারে। তবে ওষুধের পাশাপাশি হার্টের উপকারী নানা কম ক্যালোরির খাবারও খেতে হবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান কারণ অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। পাশাপাশি উল্টোপাল্টা খাবারে অভ্যস্ত হওয়াও এর অন্যতম কারণ। তাই আলোচনা করা হল, কোন কোন উপায়ে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন আপনি।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য সবজি, ফল, গম সহ নানা ধরনের শস্য থেকে তৈরি খাবার, দুধ, ডিম ইত্য়াদি শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ সাহায্য করে। পাশাপাশি নানা ধরনের ভাজাভুজি, চিপস ইত্যাদি যক কম পারবেন খাবেন।

হার্টের উপকারী খাবার হার্টকে সুস্থ রাখতে ও হার্ট ব্লক বা স্ট্রোক আটকাতে পালং শাক, বাদাম, ছানার মতো খাবার খান।
ওজন কমান ওজন বাড়লে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। পাশাপাশি বেড়ে যায় অন্যান্য রোগের সম্ভাবনাও। তাই যেকোনও উপায়ে ওজন কমান।
সোডিয়াম খাওয়া নিয়ন্ত্রণ রাখুন সোডিয়ামের মাত্রা বেশি হয়ে গেলেই নানা সমস্যা হয় শরীরে। নুন সহ নানা সোডিয়াম মিশ্রিত খাবার হিসাব করে খান। পাশাপাশি ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান।
মদ্যপানে বরত থাকুন মদ্যপান করা স্বাস্থ্যের জন্য সবসময়ই খারাপ। উচ্চ রক্তচাপে তো এটা খাওয়া চলবেই না।
কফি বেশি খাবেন না কফির মতো পানীয় রক্তচাপকে বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। সবসময় এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে রক্তচাপ কিছুতেই কমবে না।

অবসাদে ভুগবেন না ব্যস্ত জীবনে ক্লান্তি, অবসাদ এসব নিত্যসঙ্গী। আর এগুলিই রক্তচাপ, হার্টের অসুখের মূল কারণ। ফলে যত পারবেন কম অবসাদে ভুগবেন। এটি তাড়াতে নানা ধরনের শারীরিক ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম উপযোগী হতে পারে।
নিয়মিত চেক-আপ একবার রক্তচাপের সমস্য়া দেখা দিলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই আবশ্যক। আর প্রেসারের জন্য কোনও ওষুধ খাওয়ার থাকলে তা নিয়মিত খেতে ভুলবেন না।