রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ বিদ্যালয়ে চাকরি

Rajerbag

রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কিছুসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। আগ্রহীরা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম: অধ্যক্ষ
পদ সংখ্যা: ০১ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ২য় শ্রেণির স্নাতকোত্তর
অভিজ্ঞতা: ১২ বছর
বেতন: ২২,২৫০-৩১২৫০ টাকা।

পদের নাম: সহকারী প্রধান শিক্ষক
পদ সংখ্যা: ০১ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিএডসহ স্নাতক
অভিজ্ঞতা: ১০ বছর
বেতন: ১২,০০০-২১,৬০০ টাকা।

পদের নাম: সহকারী শিক্ষক, হিন্দু ধর্ম
পদ সংখ্যা: ০১ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক/স্নাতকোত্তর
বেতন: ৬,৪০০-৯,৩০৫ টাকা।

পদের নাম: সহকারী শিক্ষক, ইংরেজি
পদ সংখ্যা: ০২ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতকসহ (সম্মান)স্নাতকোত্তর
বেতন: ৬,৪০০-৯,৩০৫ টাকা।

পদের নাম: সহকারী শিক্ষক, সামাজিক বিজ্ঞান : বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
পদ সংখ্যা: ০১ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক/স্নাতকোত্তর।
বেতন: ৬,৪০০-৯,৩০৫ টাকা।

পদের নাম: সহকারী শিক্ষক, পদার্থ বিজ্ঞান
পদ সংখ্যা: ০১ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক/স্নাতকোত্তর।
বেতন: ৬,৪০০-৯,৩০৫ টাকা।

যার বরাবর আবেদন:
সভাপতি, গভর্নিং বডি, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস্ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা।

আবেদন পাঠানোর ঠিকানা:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ৩৬ শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি, রমনা, ঢাকা।

আবেদনের শেষ সময়: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে ভর্তির সুযোগ

Marin

বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি সম্প্রতি ৫২তম ব্যাচে ৩ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সায়েন্স (নটিক্যাল) এবং ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সায়েন্স (ইঞ্জিনিয়ারিং) কোর্সে বিভিন্ন পত্রিকায় ক্যাডেট ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আবেদন করতে হবে ১ অক্টোবরের মধ্যে।

আবেদনের যোগ্যতা
ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উভয় পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ পেতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পদার্থ ও গণিত বিষয়ে আলাদাভাবে জিপিএ ৩.৫০ ও ইংরেজিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩.০০ অথবা আইইএলটিএস গড় স্কোর ৫.৫ থাকতে হবে।

বয়স
পুরুষ ও মহিলা উভয় প্রার্থীর ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে সর্বোচ্চ বয়স ২১ বছরের মধ্যে হতে হবে।

শারীরিক যোগ্যতা
শারীরিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীদের উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হতে হবে।

ওজন
ওজনের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিএমআই চার্ট মোতাবেক হতে হবে। ন্যূনতম ১৭ এবং সর্বোচ্চ ২৭। যেমন (৫ ফুট ৪ ইঞ্চি : ৪৫-৭১ কেজি; ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি : ৪৮ থেকে ৭৬ কেজি)।

দৃষ্টিশক্তি
দৃষ্টিশক্তি নটিক্যাল ক্যাডেটদের জন্য ৬/৬ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডেটদের জন্য ৬/১২ (চশমাসহ অবশ্যই ৬/৬ হতে হবে।

অন্যান্য শর্ত
প্রার্থীদের অবশ্যই অবিবাহিত ও বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।

আবেদন পদ্ধতি
সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় একাডেমির পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত স্লিপে ১ হাজার টাকা এবং ব্যাংক চার্জ ১০০ টাকা মোট ১ হাজার ১০০ টাকা জমা দিতে হবে। জমা স্লিপে নিজের নাম ও নিজের বাবার মোবাইল নম্বর লিখতে হবে। প্রদত্ত মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ট্র্যাকিং নম্বর পাঠানো হবে। ট্র্যাকিং নম্বর দিয়ে সোনালী ব্যাংক বা একাডেমির ওয়েবসাইট থেকে (www.sonalibank.com.bd/ma) লিংকে ক্লিক করে ফরম পূরণ ও ৩০ কেবি মাপের ছবি আপলোড করতে হবে। ফরম পূরণ শেষ হলে প্রবেশপত্র দেখা যাবে, যা প্রিন্ট করে নিতে হবে।

নির্বাচন পদ্ধতি
প্রার্থীদের প্রথমে ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ২ ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিষয় থাকবে পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান।

পরীক্ষার প্রস্তুতি
লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে হলে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইগুলো ভালোভাবে পড়তে হবে। একজন উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণের প্রশ্নের মান যে ধরনের হয়ে থাকে, লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নও তেমনই হবে। উত্তীর্ণ হতে হলে প্রার্থীদের ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে।

পরীক্ষার সময়
লিখিত পরীক্ষা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে আগামী ৯ অক্টোবর বেলা ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্র প্রার্থীদের এসএমএসের মাধ্যমে ৬ থেকে ৭ অক্টোবরের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।

লক্ষণীয়
লিখিত, শারীরিক ও মৌখিক পরীক্ষার সময় অনলাইন থেকে পাওয়া প্রবেশপত্র, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র সঙ্গে আনতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে মেধাতালিকার মাধ্যমে প্রার্থীদের আবার প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত ডাক্তারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই প্রার্থী তাঁর ভর্তির যোগ্যতা লাভ করবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ০১ অক্টোবর ২০১৫

বিস্তারিত যোগাযোগ
ভর্তি-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রাম-৪২০৬, বাংলাদেশ ঠিকানায়।ফোন- ০৩১ ২৫১৪১৫১-৬।

ওয়েবসাইট
(www.macademy.gov.bd)

সন্তান ধারণ ক্ষমতা নিশ্চিত করতে প্রত্যেক নারী অবশ্যই করুন এই কাজগুলো

Sontan Dharon

আজকাল সন্তান না হওয়া বা বন্ধ্যা হওয়ার হার আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। দাদী-নানীদের আমলে যেখানে অনেকটা বয়স হয়ে গেলেও সন্তানের মা হওয়ার ব্যাপারটা ছিল, আজকাল দেখা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো। বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেই নারীদের সন্তান ধারণে জটিলতা দেখা দিচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। সন্তানহীন দম্পতিদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে হু হু করে। একজন নারী তাঁর উর্বরতা নিশ্চিত করতে ও সন্তান ধারণে সক্ষম থাকতে যেসব বিষয় জানা অতি জরুরী তা জেনে নিন_

১/ স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা :

নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কম বয়সেই সচেতন হতে হবে। নিজেকে জানুন, নিজের শরীর সম্পর্কে জানুন। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আপনার কোন অসুখ হলেই ডাক্তারের কাছে যাবেন, বিষয়টা যেন এমন না হয়। বরং বিবাহিত-অবিবাহিত প্রত্যেক নারীরই উচিত ২ বছর পর পর স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা নিজের একটি সম্পূর্ণ চেকাপ করানো। এতে অনেক ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত অসুখ সম্পর্কেও অগ্রিম জানতে পারবেন।

২/  পিরিয়ড সমস্যায় অবহেলা করবেন না :

সংক্রান্ত যে কোন সমস্যাকে মোটেও অবহেলা করবেন না। পিরিয়ড না হওয়া, অনিয়মিত পিরিয়ড Period , পিরিয়ডে দেরি হওয়া, পিরিয়ডের সময় প্রচণ্ড ব্যথা বা অন্য যে কোন পিরিয়ড জনিত সমস্যা দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মোটেও লজ্জা পাবেন না বিষয়টি নিয়ে।

৩/ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন :

নিজের ওজনটা নিয়ন্ত্রণে রাখুন। সুস্থ সন্তান ধারণের জন্য ওজন weight নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরী। বিশেষ করে যাদের তলপেট ভারী, তাঁরা অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করুন ও ওজন কমানোর চেষ্টা করুন। জরায়ুর আশেপাশে চর্বি জমে গেলে সন্তান ধারণে অসুবিধা হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।

৪/ স্বেচ্ছায় গর্ভপাত পরিহার করুণ :

স্বেচ্ছায় গর্ভপাত Abortion জিনিসটাকে শতভাগ পরিহার করুন। বিশেষ করে যদি আপনি প্রথমবার গর্ভবতী হয়ে থাকেন, তাহলে অতি অবশ্যই গর্ভপাত করাবেন না। পরবর্তীতে এর বড় মাসুল দিতে হতে পারে। আজকাল অনেক মেয়েই বিয়ের আগে Before wedding অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করেন, ফলে দেখা যায় এক বা একাধিক অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত Abortion করাতে। এসব করে কেবল নিজেরই সর্বনাশ ডেকে আনছেন তাঁরা।

৫/ আই পিল পরিহার করুণ :

আই পিল বা এই ধরণের যত ইমারজেন্সি কন্ত্রাসেপটিভ পিল আছে, এগুলো অবশ্যই পরিহার করুন। যদিও কোম্পানিগুলো দাবী করে যে এগুলো শতভাগ নিরাপদ। কিন্তু সত্য হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে এগুলো ব্যবহার করলে পরিণাম সন্তান ধারণে অক্ষমতা।

৬/পিল ব্যবহার করবেন না :

প্রথম সন্তান children নেয়ার আগে জন্মবিরতিকরন পিল ব্যবহার করবেন না।

৭/ নিয়মিত ব্যায়াম করুণ :

নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ওজন বাড়ানো কিংবা কমানোর জন্য নয়, কায়িক পরিশ্রম করুন নিজেকে সুস্থ রাখতে। সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু।

৮/ ধূমপান থেকে দূরে থাকুন :

ধূমপান বা মদ্যপান, কিংবা যে কোন নেশার অভ্যাস থেকে শত হাত দূরে থাকুন।

৯/ স্বাস্থ্য সম্মত খাবার :

খাদ্য তালিকায় রাখুন স্বাস্থ্য সম্মত খাবার। ডিম Egg, দুধ MIlk, হরেক রকম সবজি, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি খাবার নারীর উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

মুখের গন্ধ ? জেনে নিন সহজ সমাধান !!

Gandha

মুখের গন্ধ ? অফিসের কোনও গুরত্বপূর্ণ মিটিংয়ে আপনার পাশে বসেছেন বস। কিন্তু ক্রমাগত একটা বিচ্ছিরি গন্ধ নাকে আসছে। কোথা থেকে আসছে, তা নিজেও বুঝতে পাচ্ছেন। কিন্তু কিছু করার থাকছে না। এমন পরিস্থিতি কী করবেন?

মুখের গন্ধ খুবই বিব্রতকর সমস্যা। দিনে দুবার ব্রাশ করলেও মুখ থেকে দুর্গন্ধ যায় না। কারন, নানা রকম খাবার খাওয়ার কারণে মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। কিন্তু এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলি নিমেষেই মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে।

পানি : মুখে দুর্গন্ধ হলেই আগে পানি খান। দেখবেন দুর্গন্ধ উধাও হয়ে যাবে। খাওয়ার পর খুব ভাল করে মুখ ধুয়ে নিন। অল্প অল্প পানি নিয়ে মুখে কুলি করে ফেলে দেবেন। এরপর একগ্লাস পানি খান। দেখবেন মুখের দুর্গন্ধ চলে যাবে পুরোপুরি।

আপেল :  আপেল খেলেও মুখের দুর্গন্ধ চলে যায়। আমরা যখন আপেল খাই, তখন মুখের মধ্যে প্রচুর লালা উৎপন্ন হয়। তাতে ব্যাকটেরিয়া লালার সঙ্গে পরিষ্কার হয়ে যায়। তাতে মুখের মধ্যে তৈরি হওয়া গন্ধ দূর হয়ে যায়।

এলাচ :  এই উপায়টা হয়তো অনেকেরই জানা। এলাচ মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে দারুণ সহায়ক। যদি আপনার মুখের দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে ব্যাগে বা পকেটে কয়েকটি এলাচ রাখতে পারেন। মুখের দুর্গন্ধ হয়েছে বলে মনে হলেই এলাচ দানা মুখে পুরে দিন। দেখবেন মুখের দুর্গন্ধ চলে যাবে।

লেবু :   ভিটামিন সি মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধবংস করে দেয়। আর লেবু বা কমলালেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি। তাই মুখে দুর্গন্ধ অনুভূত হলেই লেবু বা কমলালেবু খেতে পারেন।

গ্রিন টি:  এমনিতেই গ্রিন-টি স্বাস্থ্যে পক্ষে অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর পরিমানে ফ্ল্যাবনয়েড থাকে। এই ফ্ল্যাবনয়েড আসলে মুখের মধ্যেকার ব্যাকটেরিয়াকে বিনাস করে। তাই চটজলদি মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।

চুইংগাম :  নানান ফ্লেভারের চুইংগাম এখন দোকানে পাওয়া যায়। তবে চিনিমুক্ত চুইংগামই মুখের দুর্গন্ধ আটকাতে পারে। চুইংগাম চিবিয়ে নিলে মুখের মধ্যে লালা নিঃসৃত হয়। তাতে মুকের মধ্যেকার উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার হয়ে যায়।

গুজরাটে হিন্দুদের ‘ফতোয়া’, মুসলিমদের ক্ষোভ

gujrat-beef-pic

ভারতের গুজরাটে গরুর গোস্ত নিয়ে হিন্দুদের নতুন ‘ফতোয়া’ মুসলিমদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আরবি শব্দ ব্যবহার করে সেটাকে পবিত্র কোরআনের আয়াত বলে চালিয়ে প্রচারণায় নেমেছে গুজরাট সরকার।

‘গৌসেবা এবং গৌচার বিকাশ বোর্ড’ বিলবোর্ড টাঙিয়েছে রাজধানী আমেদাবাদে । তাতে আরবি শব্দের পাশাপশি গুজরাটি ভাষায় লেখা হয়েছে, ‘গরুর গোস্ত খেলে নাকি অসুখ করে। পবিত্র কোরআনে এমন আয়াত রয়েছে।’

এ ঘটনার পর ভারতের মুসলিমদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিরোধীনেতারা বলছেন, বিজেপি সরকার ফের দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দিচ্ছেন।

ওই বিলবোর্ডে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন প্যাটেলের ছবি আর ইসলাম ধর্মের প্রতীক হিসেবে চাঁদ-তারা ব্যবহার করা হয়েছে। ‘আকরামুল বাকরা ফাইনাহা সইয়েদুল বাহাইমা’— অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ‘গরুকে সম্মান কর। এর দুধ, ঘি, মাখন রোগ সারায়। তবে এর গোস্ত খেলে অনেক রোগ হয়’। এ বাণী পবিত্র ধর্মগ্রন্থ’ আল কোরআনের। গুজরাটের বাপুনগরের সংখ্যালঘু মুসলিমদের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানাতে এই আরবি নাকি বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে।

এ বিলবোর্ড টাঙানোর পর ভারতের আলেম-ওলামা বলেছেন, গরুর গোস্ত খাওয়া নিয়ে ইসলামে কোন বিধান নেই। তবে হালাল খাবার হিসেবে গরুর গোস্ত খাওয়া ইসলাম সম্মত।

এ ঘটনার পর গুজরাজেটের বিরোধী নেতা মনোজ ঝা বললেন, হার্দিক প্যাটেলের আন্দোলন থেকে নজর ঘোরাতেই এসব করছে গুজরাট সরকার।

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ডের সদস্য মুফতি আহমেদ বললেন, ‘আরবি ভাষায় এ রকম কোনও প্রবাদ থাকতে পারে। তবে কোরআনে এ রকম কিছু বলা নেই। মুসলিমদের ভুল পথে চালিত করার জন্যই এসব লেখা হচ্ছে’।

মুসলিম প-িত আখতার উল ওয়াসি বরেন, ভারতে অনেক সময়ই মুসলিম শাসকরা গোহত্যা নিষিদ্ধ করেছিলেন। সেটা সম্পূর্ণ এদেশের মানুষদের ধর্মাবেগের কথা ভেবে। মোঘল সম্রাট বাবরও ছেলে হুমায়ুনকে গোহত্যা বন্ধের পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁর উইলে। কোথায় পেয়েছিলেন এই উপদেশ? প্রশ্ন করা হলে গৌসেবা এবং গৌচার বিকাশ বোর্ডের চেয়ারম্যান বল্লভভাই কাঠিরিয়ার জবাব, হিন্দি এবং গুজরাটিতে ছাপানো ২০ পাতার একটি বইয়ে ছিল প্রবাদটি। তাঁর রাজকোটের বাড়িতে নাকি এখনও রয়েছে সেই বই। তবে বইয়ের নাম, লেখকের নাম কিছুই মনে করতে পারেননি সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কাঠিরিয়া।

গরু সংরক্ষণ এবং কল্যাণের জন্য গুজরাটে ১৯৯৯ সালে তৈরি হয় গৌসেবা আয়োগ। ২০১২ সালে তা গৌসেবা এবং গৌচার বিকাশ বোর্ডে পরিণত করে গুজরাট সরকারের কৃষি এবং সহযোগ দপ্তরের আওতায় আনা হয়।

মুসলিমদের অভিযোগ, গুজরাট সরকার গরু সংরক্ষণের নামে গরুর গোস্ত খাওয়ার ওপরেই পরোক্ষে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে।

গুজরাটের রাষ্ট্রীয় জনতা দল আবার এর পিছনে অন্য অভিসন্ধি দেখছে। তারা বলছে, গুজরাট মডেলের ভাঁওতাবাজি দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন হার্দিক প্যাটেল। তা চাপা দিতেই এসব বিতর্ক উসকে দিতে চাইছে রাজ্যের বি জে পি সরকার। আসলে তারা কোরআন, বাইবেল বা গীতা কোনওটাই পড়েনি। আবারো প্রমাণ করলেন বিজেপি।

ভারতে মুসলমানদের গরু জবাইতে বাধাদান: ধর্মগ্রন্থ গরুর গোস্তের পক্ষেই কথা বলেছে

 Cow

ধর্ম শান্তির কথা বলে, মানবিকতার কথা বলে। ধর্মের লক্ষ্য রিপু বা প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে পরিশুদ্ধ মানব পরিগঠন এবং পরিণতিতে সুস্থ সমাজ বিনির্মাণ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, ধর্মের কাক্সিক্ষত এমন রূপ সব সময় লক্ষ্য করা যায় না। কখনও সমস্যা সৃষ্টি করেন সমাজপতিরা, কখনও বা অতিভক্তরা। ধর্ম নিয়ে রাজনীতিবিদদেরও অনেক সময় খেলা করতে দেখা যায়। এসব কর্মকাণ্ড ধর্ম ও মানবতাবিরোধী। সম্প্রতি শীর্ষনিউজ একটি খবর পরিবেশন করেছে, যা ধর্মের পবিত্র ভাবনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। খবরটিতে বলা হয়: ভারতের গুজরাটে পবিত্র কুরআনের অপব্যাখ্যা দিয়ে বিলবোর্ড টানানোর কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় মুসলিম ধর্মীয় নেতারা। গুজরাটের রাজ্যসরকার মুসলমানদের গরুর গোস্ত খেতে নিরুৎসাহিত করে বিলবোর্ড টানিয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ধর্মীয় নেতারা বলেছেন, এতে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি ক্ষমতাসীন। বিলবোর্ডে লেখা হয়েছে, গরুর গোস্ত খেলে রোগ হতে পারে। কোনো কোনো বিলবোর্ডে দাবি করা হয়েছে, ‘কুরআন বলেছে, গরুর গোস্ত স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়।’ উল্লেখ্য যে, ভারতের কট্টরপন্থী হিন্দুবাদী সংগঠনগুলো গরু জবাই নিষিদ্ধ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করে আসছে। তবে গত বছরের মে মাসে বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গরু রক্ষা আন্দোলন আরও জোরদার হয়েছে। তখন থেকে এ পর্যন্ত ভারতের কয়েকটি রাজ্যে গরু জবাই ও গোস্ত বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আমরা সবাই তো এ কথা জানি যে, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। এ পৃথিবীর মানুষ আমিষ ও নিরামিষ উভয় প্রকার খাদ্যই খেয়ে আসছে মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই। আর আমরা এ কথাও জানি যে, আমিষের উৎস পশু ও মৎস্য এবং নিরামিষ খাদ্যের উৎস তরুতলা-বৃক্ষ এবং আমরা এ কথাও জানি যে, পশু ও মৎস্যের মত তরুলতা-বৃক্ষেরও জীবন আছে।
তাই প্রশ্ন জাগে, আমিষের উৎস পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে বাধা দেয়া হচ্ছে কেন? এই বাধা কি মানবিক চেতনা কিংবা ধর্মীয় নির্দেশনার কারণে? ভারতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ধর্মীয় ভাবনার কারণে মুসলমানদের গরু জবাইতে বাধা দেয়া হচ্ছে। তাহলে তো আমাদের ধর্মের কাছেই ফিরে যেতে হয়। আসলেই কি গরু জবাইতে ধর্মের বাধা-নিষেধ আছে? প্রকৃত ব্যাপার হলো, হিন্দু ধর্মের গ্রন্থগুলো আমিষ তথা মাংস ভক্ষণের অনুমতি দেয়। ধর্মগ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে যে, হিন্দু সাধু-সন্ন্যাসীরা আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতেন। হিন্দু ধর্মের আইনের গ্রন্থ মনুশ্রুতি’র ৫ম অধ্যায়ে ৩০ নং শ্লোকে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘খাবার গ্রহণকারী সেসব পশুর মাংসই খায় যা খাওয়া যায়, তবে এতে সে কোনো মন্দ কিছু করে না। এমনকি সে যদি এটা দিনের পর দিনও করে যায়; কেননা ঈশ্বরই কতককে ভক্ষিত হওয়ার জন্য এবং কতককে ভক্ষক হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।’ মনুশ্রুতি’র একই অধ্যায়ে ৩১নং শ্লোকে বলা হয়েছে ‘উৎসর্গের শুদ্ধতার জন্য মাংস ভক্ষণ যথার্থ, এটা ঈশ্বরের বিধান হিসেবে প্রচলিত।’ এছাড়া মহাভারতের অনুশাসন পর্বের ৮৮ নং অধ্যায়েও শ্রাদ্ধের সময় গরুর মাংস পরিবেশনের কথা বলা হয়েছে। উদ্ধৃতির সংখ্যা আরও বাড়ানো যেতে পারে, তবে এর বোধহয় আর প্রয়োজন নেই। আসলে আমিষ ও নিরামিষ উভয় জাতীয় খাদ্যই মানুষের জন্য স্বাস্থ্যপ্রদ। মানুষ তার রুচি-অভিরুচির প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করবে। ধর্ম এখানে অযৌক্তিক কোনো বাদ সাধেনি। খাদ্য নিয়ে বিভিন্ন সময় যে বিতর্ক বা বিতণ্ডা বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি করা হয়েছে, তার পেছনে মদদ জুগিয়েছে মতলববাজ কিছু সমাজপতি, ধর্মগুরু ও রাজনীতিবিদ। এদের ব্যাপারে মানুষের সতর্ক থাকা প্রয়োজন এবং সামর্থ্য অনুযায়ী সামাজিক দায়িত্ব পালনও মানবিক কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
ভারতের গুজরাটে মুসলমানদের গরুর গোস্ত খাওয়ার বিরুদ্ধে কুরআনের অপব্যাখ্যা দিয়ে যে বিলবোর্ড টানানো হয়েছে তা মোটেও ধর্মসম্মত কাজ হয়নি। কারণ হিন্দু ধর্মের আইনের গ্রন্থ মনুশ্রুতিতেও পশুর মাংস খাওয়ার পক্ষেই কথা বলা হয়েছে। আসলে ওইসব বিলবোর্ড বা প্রচারণা অনাকাক্সিক্ষত সাম্প্রদায়িক চেতনা কিংবা রাজনীতির মন্দ মস্তিষ্ক থেকে উৎসারিত হতে পারে। আমরা হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সব মানুষের প্রতি আহ্বান জানাবো- ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে ধর্মের বিধি-বিধান জেনেশুনেই ধমর্ পালন করুন। ধর্ম জ্ঞান অর্জনের কথা বলে, জ্ঞানের আলো না থাকলে ধর্মের আলো পাওয়া যায় না। অতীতে অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে মতলববাজ সমাজপতি, ধর্মগুরু ও রাজনীতিবিদরা মানব সমাজের অনেক ক্ষতি করেছেন। এই সুযোগ আর তাদের দেওয়া যায় না।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য সিসিকে মনোনয়ন!

Chi Chi

মিসরীয় স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে ২০১৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে জাতিসংঘের একটি অঙ্গ সংস্থা। জাতিসংঘের অর্গানাইজেশন ফর আর্টসের (ইউএনআর্টস) মধ্যপ্রাচ্যের অফিস থেকে সিসিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মিসরের বর্তমান সরকারের সমর্থক কায়রো পোস্ট পত্রিকা।
২০১৩ সালে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর তাকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে নিজ দেশের শত শত নাগরিককে হত্যাকারী সিসিকে নোবেল পুরস্কারে মনোনয়ন দেয়ার যুক্তি হিসেবে ‘শান্তি ছড়িয়ে দিতে এবং মিসরকে অনিবার্য বিপদ থেকে রক্ষা করার তার পদক্ষেপ’ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
গত রবিবার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট সিসি যেহেতু সন্ত্রাসবাদ এবং এই অঞ্চলের সহিংসতার জন্য দায়ী হুমকিগুলো মোকাবিলায় সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এবং উগ্রপন্থীদের আদর্শচিন্তা পরিবর্তন করে দেয়ার পাশাপাশি উপদলগত কোন্দলের মূলোৎপাটন করছেন সে কারণে তাকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।’ ইতোমধ্যে মনোনয়ন নরওয়ের নোবেল পিস প্রাইজ কমিটি, ইউএনআর্টসের নিউ ইয়র্কের সদরদপ্তর এবং বিশ্বজুড়ে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে পাঠানো হয়েছে বলে সংস্থাটির আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য পরিচালক নাবিল রিজক জানিয়েছেন।
সংস্থাটির দাবি, ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় তার (সিসির) সর্বোত্তম অন্তর্দৃষ্টি, অসহায়দের জন্য তার মানবিক উদ্বেগ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সিসি ২০১৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার দাবিদার।’ ২০১৫ সালের নোবেল পুরস্কারের জন্য নোবেল শান্তি কমিটি এখন পর্যন্ত ২৭৬টি মনোনয়ন পেয়েছে। এর মধ্যে ২২৭ ব্যক্তি এবং ৪৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

ভারত যুদ্ধে যা পারেনি সন্ত্রাসীদের দিয়ে তা করতে চায় : পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

Rashid

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী পারভেজ রশিদ বলেছেন, শত্রুরা যুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জন করতে পারেনি পাকিস্তানের সমাজব্যবস্থাকে থামিয়ে দিয়ে তারা তা অর্জন করতে চায়। শত্রুরা বন্দুকের মাধ্যমে যে উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারেনি সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে তারা আজ এ বিষয়টি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর রোববার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দিবস উপলক্ষে ভারতকে লক্ষ্য করে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, আজকের দিনটি ভারতের জন্য আক্রমণ দিবস ও পাকিস্তানের জন্য প্রতিরক্ষা দিবস।

তিনি বলেন, এ দিনে দেশ রক্ষায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিটি মানুষ অংশ নিয়েছে। প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মাধ্যমে তারা এ যুদ্ধে অংশ নেয়। উল্লেখ্য, ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে দুই দেশই জয়লাভের দাবি করে ৬ সেপ্টেম্বর যুদ্ধের বিজয় দিবস পালন করে আসছে। দিবসটি উপলে গত ৫ সেপ্টেম্বর শনিবার দুই দেশই পাল্টাপাল্টি র‌্যালি ও সমাবেশের আয়োজন করে। ১৯৬৫ সালে ১৭ দিন স্থায়ী যুদ্ধে ভারতের প্রায় ৩ হাজার এবং পাকিস্তানের ৩ হাজার ৮শ’ সেনা নিহত হয় এবং আহত হয় হাজার হাজার মানুষ। সূত্র : জিও নিউজ।

চাকরি সংক্রান্ত সকল ওয়েব সাইট

jobboard

চাকরি সংক্রান্ত সকল ওয়েব সাইট নীচে দেওয়া হল:

বিনিয়োগ নেই: দীর্ঘ হচ্ছে বেকারের মিছিল

biniog

॥ সামছুল আরেফীন॥
দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আটকে আছে। কোনোভাবেই ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ বাড়ানো যাচ্ছে না। আসছে না বিদেশী বিনিয়োগও। নতুন বিনিয়োগ না হওয়ায় কমে আসছে বিদ্যমান বিনিয়োগও। ফলস্বরূপ নতুন কর্মসংস্থান তো হচ্ছেই না, কর্মহীন হয়ে পড়ছেন কর্মজীবীরাও। দীর্ঘ হচ্ছে বেকার মানুষের মিছিল। হতাশা ঘিরে ধরছে তরুণ প্রজন্মকে। বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিল্পে গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এবং এখনো ঠিকমতো সংযোগ না পাওয়ায় অনেকে বিনিয়োগ প্রকল্প হাতে নিয়েও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেছেন। এর সঙ্গে আছে অনুন্নত অবকাঠামো। আর বেশি ভোগাচ্ছে ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার। এ ব্যাপারে এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ স্পষ্টতই বলেছেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কেন হচ্ছে না, তার সবচেয়ে বড় কারণ ব্যাংকঋণের চড়া সুদের হার। এটাকে যদি এক অঙ্কের ঘরে রাখা যায় তাহলে বিনিয়োগ এমনিতেই বেড়ে যাবে। এর সঙ্গে লাগবে শিল্পে বিদ্যুত সংযোগ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং উইং কর্তৃক প্রাক্কলিত প্রাথমিক হিসেবে বলা হয়েছে, শিল্পখাতের বৃহৎ ও মাঝারি উপখাতে গত অর্থবছরের চেয়ে এ বছর প্রবৃদ্ধি কমেছে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ উপখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর হালকা শিল্প উপখাতে প্রবৃদ্ধির হার কমেছে ২ দশমিক ২১ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এ উপখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ।

উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, দেশে প্রতি বছর ১৮ থেকে ২০ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি হয়। গত এক বছরের অস্থিরতায় তাদের কাজ পাওয়ার সুযোগ তো হয়ইনি, উল্টো কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ১০ লাখ কর্মজীবী। গত ছয় মাসে কেবল তৈরি পোশাক শিল্পখাতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন লক্ষাধিক শ্রমিক। এ সময় দেশে নতুন করে কোনো কারখানাই গড়ে ওঠেনি। চালু হয়নি বন্ধ থাকা কয়েক হাজার কারখানার একটিও।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের (বিওআই) তথ্যে দেখা যায়, ২০১৩ সালে দেশে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে বিনিয়োগ নিবন্ধিত হয়েছে ৪২ হাজার ৪৮৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। নিবন্ধিত শিল্প প্রকল্পের সংখ্যা এক হাজার ১৯৭টি। ২০১২ সালে এক হাজার ৬৫৫টি শিল্প প্রকল্পে স্থানীয় বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৭৮ কোটি ছয় লাখ টাকার। অর্থাৎ বিনিয়োগ নিবন্ধন কমেছে ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। ২০১৪ সালের প্রথম চার মাসে বিনিয়োগ নিবন্ধনের হার আগের বছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ কমেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

বিনিয়োগ বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদেশী বিনিয়োগ নিবন্ধন মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এ সময় ছয়টি শতভাগ বিদেশী এবং ১৫টি যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প নিবন্ধিত হয়। নিবন্ধনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৭৮৭ কোটি টাকা। অথচ আগের প্রান্তিকে ২১টি শিল্প প্রকল্পে বিদেশী বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৭০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। বিওআইয়ের তথ্য থেকে দেখা যায়, আগের বছরের চেয়ে ২০১৩ সালে শিল্প প্রকল্পের প্রস্তাব বেশ কমেছে। ২০১২ সালে যেখানে এক হাজার ৮৫৫টি প্রকল্প নিবন্ধিত হয়েছিল, গত বছর তা নেমে আসে এক হাজার ৩৭৮টিতে।

জানা যায়, দেশের মোট কর্মসংস্থানের অন্তত ৩ শতাংশ মানুষ জড়িয়ে আছে নির্মাণ খাতের সাথে। গত তিন বছরে এ খাতে নতুন বিনিয়োগ তো হয়ইনি, আটকে আছে ৯৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। ত্রিশ হাজারের বেশি নির্মিত ফ্যাট বিক্রি না হওয়ায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে পুরো শিল্প সেক্টরে। এর প্রভাবে মন্দাবস্থা বিরাজ করছে রি-রোলিং, সিমেন্ট, ব্রিকফিল্ডসহ অনেক উপখাতেই। সুসংবাদ নেই বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও। সরকারের উদাসীনতা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বৈরী সম্পর্কের কারণে বিদেশে কর্মী প্রেরণ প্রায় বন্ধই হয়ে আছে। কৃষি, পোলট্রি, পাট, চা, চামড়ার মতো শিল্পগুলোতেও চলছে নানাবিধ হতাশা।

ফেডারেশন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, দেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে একজন শিল্পোদ্যোক্তার জন্য এটি কোনোভাবেই সুবিধাজনক নয়। গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কট তো আছেই, রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বিবেচনার বিষয়। এমতাবস্থায় বিদ্যমান বিনিয়োগ নিয়ে উদ্যোক্তারা যখন চরম বিপাকে তখন নতুন বিনিয়োগ নিয়ে ভাববার সময় কোথায়? বিনিয়োগ না হলে উৎপাদন হ্রাস পাওয়া স্বাভাবিক মন্তব্য করে তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে নতুন কর্মসংস্থান তো দূরের কথা, বিদ্যমান কর্মীদের ধরে রাখাই কঠিন।

বিদেশী বিনিয়োগ কমেছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দেশে ১৫২ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের প্রকৃত বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে। এর আগের বছর বিনিয়োগে পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৯৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ এফডিআই কমেছে।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনাইটেড ন্যাশন্স কনফারেন্স অন ট্রেড এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আঙ্কটাড)-এর তথ্য মতে, ২০১৩ সালে দেশে নিট বিনিয়োগ আসে ১৫৯ কোটি ৯১ লাখ ডলার। আর ২০১৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৫২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। আগের বছরের তুলনায় সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে চার দশমিক ৭৪ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৪ সালে দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগ আসে ২০৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এসব তথ্য উঠে আসে গত ২৪ জুন রাজধানীতে আঙ্কটাড প্রকাশিত বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন-২০১৫’ থেকে।

বিনিয়োগ সক্ষমতা হারাচ্ছে ব্যাংক

মধ্যবিত্তের আমানতের হার দিন দিন কমছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবিরতা, মূল্যস্ফীতি ও চলমান অবস্থায় মানুষ আর নতুন করে ব্যাংকে সঞ্চয় রাখতে পারছে না। পাশাপাশি বিনিয়োগ স্থবিরতার কারণে ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। পরিচালনব্যয় কমানোর জন্য আমানতের সুদহার কমানো হচ্ছে। এতে কমে গেছে সার্বিক আমানতের প্রবৃদ্ধি। অর্থনীতির প্রধান প্রধান সূচক দিয়ে তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আর্থিক খাতে মোট আমানত সংগ্রহ করা হয়েছিল ৮৭ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। সমাপ্ত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) তা কমে হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। এক বছরে আমানত কমেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বা সাড়ে ১৩ শতাংশ।

ব্যাংকারদের মতে, আমানত কমে গেলে বিনিয়োগের জন্য টাকার উৎস কমে যায়। এতে ব্যাংক আগের মতো বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারে না। কমে যায় ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতা। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা ও সর্বোপরি সুদহার কমে যাওয়ায় মানুষ ব্যাংকের আমানত ভেঙে ফেলছে। যার প্রভাব পড়ছে আমানতে। এটা অব্যাহত থাকলে ব্যাংকিং খাতসহ পুরো অর্থনীতির জন্য খারাপ সঙ্কেত বয়ে আনবে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে যখন স্থবিরতা নেমে আসে তখন তলবি আমানত নেতিবাচক হয়ে পড়ে। কারণ এ সময় ব্যবসায়ীরা আগের মতো লেনদেন করতে পারেন না। তাদের হাতে টাকা থাকে না। সবসময় ব্যবসায়ীরা টানাটানির মধ্যে থাকেন। আর মেয়াদি আমানত কমে যাওয়ার অর্থ হলো সাধারণ মানুষ আর আমানত রাখতে পারছেন না। মূল্যস্ফীতিই তাদের সঞ্চয় খেয়ে ফেলছে। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি দীর্ঘ দিন ধরে দুই অঙ্কের ঘরে অবস্থান করছে। আয়ের সাথে ব্যয় সঙ্কুলান করতে পারছে না নি¤œ মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নির্ধারিত আয়ের মানুষ। এ কারণে এখন ভবিষ্যতের জন্য জমানো অর্থে হাত দিয়েছেন। মেয়াদপূর্তির আগেই ব্যাংকে জমানো স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ডিপিএস ভেঙে ফেলছে। সঞ্চয় ভেঙে খাওয়ায় কমে যাচ্ছে ব্যাংকগুলোর আমানত।

ব্যাংকে জমছে অলস টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বর্তমানে দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার উদ্ধৃত্ত তারল্য রয়েছে। এর মধ্যে একেবারে অলস পড়ে আছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব নগদ অর্থ একসময় বাজারে বিনিয়োগকৃতই ছিল।

বাজারে অলস টাকার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫ লাখ টাকা সুদ দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকের অলস টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ভল্টে অলস রেখে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, টাকার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ অলস অর্থের ব্যয়বহুল ব্যবস্থাপনায় নেমেছে। এজন্য গড়ে প্রতিদিন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ১৭ হাজার কোটি টাকা তুলে আনা হচ্ছে। এ টাকা কোনো উৎপাদনশীল খাতে ব্যবহার করা না হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে অলস ফেলে রাখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন কোনো বিনিয়োগই আসছে না। আর বিনিয়োগ না আসার কারণে ব্যাংকে অলস টাকার পরিমাণ বেড়ে চলছে। এ অলস টাকার কারণেই বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়েছে। এতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যয়বহুল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। বিনিয়োগ মন্দার কারণে প্রতিটি ব্যাংকের হাতেই উদ্ধৃত্ত তহবিল রয়েছে। সাধারণত টাকার প্রবাহ বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর এ আশঙ্কা থেকেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অলস টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে অলস ফেলে রাখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিল ও রিভার্স রেপোর মাধ্যমে এ টাকা তুলে নিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গত এক মাসের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত জুলাই মাসে ১৮ কার্যদিবসে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে রিভার্স রেপোর মাধ্যমে তিন লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে, যা গড়ে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এ টাকার বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে সুদ গুণতে হচ্ছে সোয়া ৫ শতাংশ হারে। ১ দিন থেকে ৩ তিন দিন মেয়াদি এ টাকা নেয়া হচ্ছে। ১৭ হাজার কোটি টাকার বিপরীতে সোয়া ৫ শতাংশ সুদে গড়ে প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সুদ গুণতে হচ্ছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে ৫ জুলাই ২৩ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। ১ দিন থেকে ৩ দিন মেয়াদি এ টাকা তুলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে অলস ফেলে রাখা হচ্ছে। মাসের শেষ কার্যদিবস গত ৩০ জুলাই বৃহস্পতিবারও তুলে নেয়া হয়েছে ১৬ হাজার ১৯১ কোটি টাকা।

বিনিয়োগ থেকে আয় কমছে বাড়ছে ব্যয়

ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দুরবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ থেকে আয় কমলেও বাড়ছে ব্যয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, গত বছরে প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজিবাজার, ট্রেজারি বিল, বন্ডসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ থেকে আয় কমে নেমেছে ১২০ কোটি টাকায়, যেখানে আগের বছরে ছিল ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু পরিচালন ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৫৪০ কোটি।

এসব প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের কাছ থেকে আমানত নিচ্ছে। কিন্তু উদ্যোক্তার অভাবে তা বিনিয়োগ করতে পারছে না। এমনকি বিদ্যমান উদ্যোক্তাদেরও কম সুদে বিনিয়োগ দেখিয়ে ভাগিয়ে নিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এমনি পরিস্থিতি মহাবিপাকে পড়েছে দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেকেই নতুন উদ্যোক্তা খুঁজছেন। বাধ্য হয়ে বিকল্প বিনিয়োগের দিকে ছুটছে তারা। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ থেকে সরে এসে কেউ কেউ স্বল্প মেয়াদে বিনিয়োগ করার চেষ্টা করছেন।

আবার আমানত নিয়ে আমানত পরিশোধ করছে অনেক প্রতিষ্ঠান। নতুন করে বিনিয়োগ হচ্ছে না। ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের। এতে প্রতিষ্ঠানের আয় না বাড়লেও বিদ্যমান পরিচালন ব্যয় কমছে না, বরং ক্ষেত্রবিশেষ বেড়ে যাচ্ছে।

বিদেশী বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করবে

দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির করুণ অবস্থার মধ্যেও গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। একইসঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখতে মূল্য বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনার জোরালো দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে ডিসিসিআই। বিবৃতিতে বলা হয়, মূল্য বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যে নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে ব্যবসায় ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং রফতানি বাধাগ্রস্ত হবে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ-এর মূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি ডাবল ডিজিটে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা কিনা অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হতে পারে।

ডিসিসিআই জানায়, বাংলাদেশের অর্থনীতির ধারাকে গতিশীল রাখার জন্য সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ভবিষ্যতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এ দেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করবে। ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে আমাদের টেক্সটাইল, তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাত ইতোমধ্যে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে, তথাপি মূল্য বৃদ্ধির ফলে এ খাতগুলোর অগ্রগতির ধারা ব্যাহত হবে।

লন্ডনে রোড শো

এ দিকে বিনিয়োগে বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে লন্ডনে দুদিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট রোড শো’-এর আয়োজন করেছে সরকার। ১০ সেপ্টেম্বর লন্ডনের ফিনান্সিয়াল ডিস্ট্রিক্ট ক্যানারি ওয়ার্ফের ইস্ট উইন্টার গার্ডেনে এই রোড শো শুরু হওয়ার কথা। আয়োজনে অংশ নেবেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আতিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এসএ সামাদ। বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিভিন্ন বিদেশী ব্যাংকের কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেবেন।

ছয় বছরে ৫৭ লাখ মানুষ বাস্তুহারা

উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা। গত ছয় বছরে বাংলাদেশের ৫৭ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন। এ তালিকার শীর্ষে রয়েছেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। মূলত ঘূর্ণিঝড় ও আইলার কারণে এ অঞ্চলের মানুষ বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে শুধু বেড়িবাঁধ ভেঙেই আট লাখ ৪২ হাজার মানুষ প্রাথমিকভাবে বাস্তুহারা হয়ে পড়েছেন। পরে বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

যদিও বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চীন। এরপর রয়েছে ভারত, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়া। গত ছয় বছরে বিশ্বে মোট বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ৬৪ লাখ। এর মধ্যে ২০১৪ সালেই বিশ্বের এক কোটি ৯৩ লাখ মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ হিসেবে প্রতি সেকেন্ডেই একজন করে মানুষ বাস্তুহারা হয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। মানুষের বাস্তুহারা হওয়ার এই ক্রমবর্ধমান পরিসংখ্যানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জলবায়ুবিষয়ক আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার ও নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল’-এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ছয়টি এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনার দাকোপ, কয়রা ও বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি এবং বাগেরহাটের মংলা উপজেলা রয়েছে। এ সব এলাকার মানুষ ঘূর্ণিঝড়ে সব হারিয়ে দেশের অন্যত্র চলে যান বা যেতে বাধ্য হন। পরে বাস্তুহারা এই মানুষের মধ্যে বেশির ভাগই আশ্রয় নেন ঢাকা, চট্টগ্রাম ও যশোর জেলায়। তবে অনেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতেও আশ্রয় নিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বাস্তুচ্যুত হয়ে যারা অন্যত্র গেছেন, তারা আগের চেয়ে আরো খারাপ অবস্থায় রয়েছেন। জমিজমা না থাকায় পরিবারগুলোর মাসিক আয় কমে গেছে। এই বাস্তুচ্যুত মানুষের একাংশ চট্টগ্রামে পাহাড়ের ঢালে আশ্রয় নিয়ে আবারো দুর্যোগের কবলে পড়েছেন। এই মানুষগুলোর নির্দিষ্ট কোনো পেশা নেই, নেই নিজের কোনো ঘর। তারা বস্তুত রিকশা চালিয়ে বা ঠিকা শ্রমিকের কাজ করে বেঁচে আছেন।

সংস্থা দু’টির চলতি সালের ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে বিশ্বের এক কোটি ৯৩ লাখ মানুষ নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর গত ছয় বছরে মোট বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ৬৪ লাখ। প্রতি সেকেন্ডেই একজন করে মানুষ তার বসতভিটা থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন।