‘ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ ফেসবুক’

facebook

তথ্যপ্রযুক্তি যেমন এনেছে গতি, তেমনি এর নেতিবাচক প্রভাবে ডুবছে তরুণ সমাজ। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ফেসবুক-ইন্টারনেট ছাড়া ছাত্র-ছাত্রী খুঁজে পাওয়াই দায়। ফেসবুক-ইন্টারনেটেই ডুবছে শিক্ষা ব্যবস্থা।

গতকাল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) ফল প্রকাশের পর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান সংবাদমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।

মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের কলেজে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ থাকার পরও অনেক ছাত্রী লুকিয়ে ফোন নিয়ে আসে। ছাত্রীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বাথরুমে গিয়ে মোবাইলে কথা বলে। মোবাইল আটকে রাখলে অভিভাবকরা কলেজে এসে অভিযোগ করেন, কেন মোবাইল ধরেছি। তাহলে আমরা কোথায় যাব? কিভাবে শিক্ষা দেবো?

তিনি বলেন, অনেক অভিভাবক এসে অভিযোগ করেন, তার মেয়ে রাত জেগে পড়ার নামে মোবাইলে ফেসবুক খুলে বসে থাকেন। এভাবে ফেসবুক ব্যবহার করার ফলে শিক্ষার মান দিন দিন খারাপের দিকেই যাবে। আগামীতে আরো খারাপ ফল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পর্তুগীজদের নেতৃত্বে রানা তসলিম উদ্দীন

portogiz

সময়ের প্রেক্ষাপটে ২১ বছর আগে ১৯৯০ সালে যাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিলো, সেই মানুষটিই আজ নেতৃত্ব দিচ্ছেন পর্তুগালের লিসবন শহরে। রাজনৈতিক অঙ্গনের শিক্ষা গুরু গৃহ শিক্ষক আমিনুল হক আমিনের কাছে রানা তসলিম উদ্দীন শিখেছিলেন কিভাবে মানুষকে ভালবাসতে হয়, ভালবাসতে হয় দেশকে। তার কাছে রাজনীতি করার উৎসাহ পেয়ে আজ পর্তুগালের লিসবন শহরের কাউন্সিলর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছেন তিনি।

দেশ ছেড়ে যাবার সময় বারবার যাকে ভাবতে হয়েছে যে, দেশ ছাড়বে কিনা! দেশ ছাড়বে না বলে যে ছিঁেড় ফেলেছিল সৌদী আরবের এনওসি। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত জেগে থেকেছে যে মানুষটি সিদ্ধান্ত হীনতায়, তিনিই তসলিম উদ্দীন! দেশ ছেড়ে কেন যাবে সে? যে দেশকে এত ভালবাসে, প্রতিদিন সকাল হয় যার বাংলার সোদা মাটির গন্ধে সেই দেশ ছেড়ে দূরে থাকতে হবে? এটাও কি সম্ভব! ১৬০০ টাকায় তৈরী পাসপোর্ট, ১৩ হাজার টাকার ড্রাগন টিকিট আর ৫০০ ডলার নিয়ে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন অজানার উদ্দেশ্যে হংকং শহরে। হংকং থেকে ফিরে এসেছিলেন বাংলাদেশে। আবারো দেশ ছাড়তে হয়েছে। তখনো দোদুল্যমান অবস্থায় ছিলেন কোন দেশে যাবেন। কোরিয়া নাকি ইউরোপ! শেষ পর্যন্ত গিয়ে বসতি গড়ে ছিলেন পর্তুগালে। আজও সে জায়গাতেই রয়ে গেছেন।

ডানপিটে তসলিম উদ্দীন, ছোটবেলায় ডাংগুলি খেলতে গিয়ে কারো মাথা ফাটিয়ে দেয়া, খড়ের গাদায় লাফালাফি করে সেখান থেকে নীচে গড়িয়ে পড়া, ধান ক্ষেতের নাড়া জ্বালিয়ে আগুন পোহানো, জ্বলন্ত আগুনের ছাঁইয়ের স্তুপে লাফিয়ে পড়ে দুই হাত পুড়িয়ে ফেলা, মার্বেল খেলতে গিয়ে মার্বেলের উপর বাড়ি দিয়ে হাত কেটে ফেলা, কি করেননি তিনি! বাংলাদেশের টগবগে তরুণ এক সময় যিনি রাজপথ মাতিয়ে রাখতেন বজ্র কণ্ঠের স্লোগানে, সেই তিনিই আজ পতুর্গালের মূলধারার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিসবন- এর সোসাইটিকে। তুলে ধরছেন বাংলাদেশকে। বাংলাদেশীদের অধিকার ও দাবীকে মূলধারার রাজনীতির কাছে তুলে ধরবার জন্য ২০০৭ সালে যোগ দেন পর্তুগাল সোসালিস্ট পার্টিতে। ২০১৩ সালে পর্তুগীজদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভিনদেশে আপনজনদের। পর্তুগীজরা দেশীয় না হয়েও ভালবেসে কাউন্সিলর নির্বাচন করেছেন তাকে। তুলে দিয়েছেন নেতৃত্ব তার হাতে। বিশ্বাস তাদের কল্যাণে নিশ্চয় পাশে দাঁড়াবে তসলিম। তিনি যখন লিসবন যান তখন অনেক খুঁজে বের করতে পেরেছিলেন ৫ জন বাংলাদেশীকে। আজ সেখানে বাংলাদেশীদের সংখ্যা ১০ থেকে ১২ হাজার। ৯৪ সালে পর্তুগালের নাগরিকত্ব গ্রহন করে বাংলাদেশীদের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে গড়ে তুলেছেন বেশ কিছু সামাজিক – সাংস্কৃতিক সংগঠন। সে সব সংগঠনের নেতৃত্ব নতুন প্রজন্মের হাতে সমর্পণ করে তিনি যোগ দিয়েছেন মূলধারায়। তার নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ কালচারাল ইউনিয়ন অব পর্তুগাল, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার-এর মতো সংগঠনগুলো। পর্তুগীজদের মাঝে তুলে ধরেছে বাংলাদেশীদের সংস্কৃতি ও উৎসবকে। তারই ধারাবাহিকতায় সেদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন একটি স্থায়ী শহীদ মিনার। পর্তগীজ সরকারের দেয়া জায়গায় নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে মসজিদ কমপ্লেক্স। এর নির্মাণ ব্যয় ৩ মিলিয়ন ইউরো পর্তুগীজ সরকার বহন করবেন বলে যে আশ্বাস দিয়েছেন। মসজিদ কমপ্লেক্স-এর রূপ দেয়া এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এভাবে বিদেশের মাটিতে সমাজসেবায় জীবনের খোজে এগিয়ে চলেছেন রানা তসলিম উদ্দিন।

তুরস্কে পর্বতের শীর্ষে মসজিদ নির্মাণ

Turkey_Mosque

তুরস্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রেইজ (Rize) প্রদেশের কেবলা পর্বতের শীর্ষে একটি মসজিদের পুনঃনির্মাণ কাজ শেষ করে তা নামাজের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই পুনঃনির্মিত মসজিদটি দেখতে প্রচুর মানুষ ভীড় করছেন। খবর ডেইলি সাবাহর।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগানের জন্মস্থান রেইজ প্রদেশের ঘুনি সু এলাকা। আর এই শহরের ১১৩০ মিটার উঁচুতে কেবলা পর্বতের শীর্ষে মসজিদটি আকর্ষণীয় ডিজাইনের মাধ্যমে পুনঃনির্মাণ করে শহরটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হলো। তুরস্কের অন্যান্য এলাকা থেকে এ এলাকা ভ্রমনকারীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় স্থান। কেবলা পর্বতের বিশেষত্ব হলো, এ পর্বত থেকে ঘুনি সু এলাকা প্রায় সবটাই দেখা যায়।

মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগান, ঘুনি সু (Guneysu) জেলার গভর্নর ইহসান সেলিম ও মসজিদ বিষয়ক অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা মাহমুদ এফেন্দিসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

Turkey_Mosque_01_

আলোচিত মসজিদটি ১৯ শতকের শুরুর দিকে প্রথম নির্মাণ করা হয়। তখন মসজিদটির অবকাঠামো ছিল কাঠের। পরে ১৯৬০ সালের দিকে এক অগ্নিকাণ্ডে মসজিদটি পুড়ে যায়। এরপর মসজিদটি কংক্রিট দ্বারা নির্মাণ করা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় রিসেপ তায়িপ এরদোগান মসজিদটি পরিদর্শন করেন সেখানে অত্যাধুনিক ডিজাইনের আলোকে মসজিদটি পুনঃনির্মাণের আদেশ দেন।

পুনঃনির্মিত মসজিদে ৪৫ বর্গমিটার জায়গা নারী নামাজীদের জন্য সংরক্ষিত। এ মসজিদে একত্রে প্রায় ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদের সামনে বেশে প্রশস্ত একটি খোলা মাঠ রয়েছে। রয়েছে মসজিদ লাগোয়া ইমামের বাসভবন। মসজিদের গম্বুজের উচ্চতা যথাক্রমে ১৩ ও ২৭ মিটার। মসজিদে ঠাণ্ডা ও গরম পানির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

এছাড়া মসজিদ সংলগ্ন রাস্তা ও পর্বর্তে উঠার পথে ছোট ছোট কিছু বিশ্রমাগার নির্মাণ করা হয়েছে। আলোচিত এই মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করবেন তুরস্কের সেন্ট্রাল শরিয়া কাউন্সিলের সদস্য মুফতি রেহমান মেহমুদ।

হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও প্রকারসমূহ

islambg

হজ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। হাদিসে হজ আদায়কারীকে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ইবাদতসমূহের মাঝে একমাত্র হজের ক্ষেত্রে অর্থ ও শারীরিক শ্রমের প্রয়োজন এবং সামর্থ্য থাকা জরুরি।

হজ ফরজ হওয়ার শর্তসমূহ
১. মুসলমান হওয়া, ২. জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া, ৩. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া, ৪. স্বাধীন হওয়া, ৫. হজের নির্ধারিত সময়ে হজ আদায় করা, ৬. মধ্যম ধরনের ব্যয় হিসেবে সফরের ব্যয় বহনের সামর্থ্য থাকা, যদি হজ পালনকারি মক্কা শরিফে অবস্থান করেন তবুও।

৭. যারা মক্কা শরিফের বাইরে থাকেন তাদের জন্য হজ পালনের শর্ত হলো- মালিকানা বা ভাড়া সূত্রে স্বতন্ত্রভাবে একটি বাহন বা অন্যকিছু ব্যবহারের সামর্থ্য থাকা। যেমন: আমাদের দেশের হাজীরা বিমান ব্যবহার করে থাকেন। তবে কেউ যদি বিনিময় ছাড়া তার বাহন বা সওয়ারি ব্যবহারের অনুমতি দেয় তাহলে তা সামর্থ্য হিসেবে গণ্য হবে। যারা মক্কার আশেপাশে অবস্থান করেন, তাদের ওপর তখন হজ ফরজ হয়। যখন তারা কষ্ট সহ্য করে নিজ শক্তিতে পায়ে হেটে হজ করতে পারে। কিন্তু হাঁটতে সক্ষম না হলে সেই ব্যক্তি মক্কার অধিবাসী হোক বা না হোক তার জন্য অবশ্যই বাহনের প্রয়োজন হবে।

৮. অমুসলিম দেশে ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তির, ‘হজ ইসলামের একটি রুকন (ফরজ)’-একথা জানা থাকা বা সে ব্যক্তি মুসলিম দেশের অধিবাসী।

যে সব কারণে হজ ওয়াজিব হয়
১. সুস্থ থাকা, ২. হজে যাওয়ার বাহ্যিক বাধা দূরীভূত হওয়া, ৩. রাস্থাঘাট নিরাপদ থাকা (স্থল ও সামুদ্রিক পথে যদি অধিকাংশ লোক নিরাপদে ফিরে আসে তবেই রাস্থা নিরাপদ বলে ধর্তব্য হবে), ৪. মহিলাগণ তাদের ইদ্দত (পিরিয়ড) অবস্থায় না থাকা, ৫. নারীর ক্ষেত্রে হজে তার সাথে একজন মুসলমান আস্থাভাজন, জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্ত বয়স্ক মাহরাম পুরুষ বা স্বামী থাকা।

হজের কাজসমূহ
চারটি কাজ করলে স্বাধীন ব্যক্তির হজের ফরজ বিশুদ্ধভাবে পালিত হয়। এক. ইহরাম। দুই. ইসলাম। এ দু’টি হলো হজের শর্ত। অতঃপর হজের অপর দুই ফরজ পালন করা। অর্থাৎ জিলহজের নবম তারিখে সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে যাওয়ার পর থেকে কোরবানির দিনের ফজর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অন্তত এক মুহূর্ত আরাফাতের ময়দানে ইহরাম অবস্থায় অবস্থান করা। তবে শর্ত হলো, এর পূর্বে ইহরাম অবস্থায় স্ত্রী সহবাস না করা চাই। দ্বিতীয় ফরজ হলো তাওয়াফে জিয়ারতের অধিকাংশ চক্কর যথাসময়ে অর্থাৎ দশম তারিখের ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর পালন করা।

হজের ওয়াজিবসমূহ
১. মিকাত থেকে ইহরাম বাধা, ২. সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করা, ৩. জিলহজের দশ তারিখে ফজরের সময় শুরু হওয়ার পর এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে মুজদালিফায় থাকা, ৪. জামারায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা, ৫. হজে কেরান ও হজে তামাত্তু পালনকারীর পশু জবেহ করা, ৬. মাথা মুন্ডানো বা চুল ছোট করা, ৭. মাথা মুন্ডানোর কাজটি হারাম শরিফে এবং কোরবানির দিনগুলোতে সম্পন্ন করা, ৮. মাথা মুণ্ডানোর পূর্বে কঙ্কর নিক্ষেপ করা, ৯. হজে কেরান ও হজে তামাত্তু পালনকারীর কঙ্কর নিক্ষেপ ও মাথা মুণ্ডানোর মধ্যবর্তী সময়ে পশু জবেহ করা, ১০. কোরবানির দিনগুলোতে তাওয়াফে জিয়ারত সম্পন্ন করা, ১১. হজের মাসগুলোতে সাফা-মারওয়ার মধ্যখানে সায়ী করা বা দৌঁড়ানো, ১২. গ্রহণযোগ্য তাওয়াফের পর সায়ী করা, ১৩. ওযর ব্যতীত পায়ে হেঁটে সায়ী করা, ১৪. সাফা থেকে সায়ী আরম্ভ করা, ১৫. বিদায়ী তাওয়াফ করা, ১৬. বায়তুল্লাহ শরিফের সবক’টি তাওয়াফ হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) থেকে শুরু করা, ১৭. ডান দিক থেকে তাওয়াফ শুরু করা, ১৮. ওজর ছাড়া পায়ে হেঁটে তাওয়াফ করা, ১৯. ছোট-বড় উভয় প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র থাকা, ২০. সতর ঢাকা, ২১. তাওয়াফে জিয়ারতের অধিকাংশ চক্কর  (কোরবানির দিনগুলোতে) সম্পন্ন করার পর অবশিষ্ট চক্করগুলো সম্পন্ন করা ও ২২. সব ধরনের নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকা।

যেমন, পুরুষদের সেলাইকৃত কাপড় পরিধান করা এবং মাথা ও চেহারা ঢাকা, মহিলারা চেহারা ঢাকা, যৌন উত্তেজক কথাবার্তা বলা, গুনাহের কাজ করা, ঝগড়া-বিবাদ করা, শিকার বা শিকারের প্রতি ইশারা করা কাউকে শিকার দেখিয়ে দেয়া ইত্যাদি।

হজ মোট তিন প্রকার। ১. ইফরাদ ২. তামাত্তু এবং ৩. কেরান।

ইফরাদ হজের পরিচয়
ইফরাদ শব্দের আভিধানিক অর্থ- একা, একাকি বা পৃথক। শরিয়তের পরিভাষায় মিকাত হতে শুধু হজের নিয়ত করে ইহরাম বেঁধে শুধুমাত্র হজ সম্পন্ন করার নাম ইফরাদ।

তামাত্তু হজের পরিচয়
তামাত্তু হজের আভিধানিক অর্থ হলো, উপকারিতা অর্জন করা, উপভোগ করা। পরিভাষায় মিকাত হতে প্রথমে ওমরার ইহরাম বেধে তার কার্যাবলি সমাপন করে হালাল হওয়ার পর হজের সময় হজের ইহরাম বেঁধে তার আহকামসমূহ সম্পাদন করাকে তামাত্তু হজ বলে।

কেরান হজের পরিচয়
কেরানের শাব্দিক অর্থ মিলানো, মিশ্রণ করা। পরিভাষায় মিকাত হতে একসাথে হজ ও ওমরার নিয়ত করে ইহরাম বেঁধে হজর ও ওমরা একই ইহরামে সমাপ্ত করাকে কেরান হজ বলে।

হজের দিনের বিভিন্ন নাম
১. জিলহজের আট তারিখকে ‘ইয়াওমুত তারবিয়্যা’, নয় তারিখকে ‘ইয়াওমুল আরাফাহ’, দশ তারিখকে ‘ইয়াওমুন নাহর,’ এগারো তারিখকে ‘ইয়াওমুল উকুফ,’ বারো তারিখকে ‘ইয়াওমুল নাফরিল আওয়াল’ এবং তেরো তারিখকে ‘ইয়াওমুল নাফরিস সানি’ বলে।

সঙ্গীতেই মিলবে রোগের মুক্তি

treatment-2

সুস্থ ও সুন্দর মনন সৃষ্টিতে সঙ্গীতের প্রভাব অপরিসীম তা আমরা জানি। সঙ্গীত যেভাবে মানুষকে আকর্ষণ করে অন্য কোন কিছুই তা পারেনা। সঙ্গীতে মানুষ সিক্ত হয়, আন্দোলিত হয়, বেদনার্ত হয়। সঙ্গীত আমাদের মস্তিস্কের আবেগের অংশকে উদ্বেলিত করে। প্রতিদিনের কাজের চাপে যখন আমরা ক্লান্ত-বিষণ্ণ হয়ে পড়ি তখন সঙ্গীতেই মেলে মুক্তি। তবে নতুন তথ্য হচ্ছে সঙ্গীত শুধু আমাদের ক্লান্তি-ই দূর করেনা বরং জটিল রোগ থেকেও সারিয়ে তোলে। তেমনি একটি রোগ হচ্ছে মৃগী রোগ। মৃগী রোগের চিকিৎসায় প্রথাগত চিকিৎসার পাশাপাশি সঙ্গীত একটি কার্যকর চিকিৎসা হতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টিন ক্যারিটন এর নেতৃত্বে একদল গবেষক গবেষণাটি করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেডিকেল সেন্টারে ২১ জন মৃগী রোগীর উপর গবেষণা চালিয়ে তারা দেখেছেন যে গান শোনার পরে মৃগী রোগীদের মস্তিস্ক সুস্থ মানুষের চেয়ে ভিন্ন ভাবে সাড়া দেয়।

গবেষকরা বলছেন, বেশির ভাগ মানুষ সাধারণত অস্থায়ী মৃগীরোগে ভুগে থাকেন। সঙ্গীতে যা অনেকটাই সেরে যায়। গান শোনার পরে তাদের মস্তিস্কের তরঙ্গ প্রবাহে পরিবর্তন আসে। মৃগীরোগের প্রচলিত চিকিৎসা চলাকালে রোগীদের গান শুনিয়ে ইতিবাচক এই প্রভাব আবিষ্কার করেছেন বলে তাদের দাবি।

টরেন্টোতে আমেরিকান সাইকোলজিকেল অ্যাসোসিয়েশন এর ১২৩তম বার্ষিক সম্মেলনে গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও সঙ্গীত হারানো স্মৃতি ফিরে পেতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, গান শোনার ফলে দুই প্রজন্মের পুরনো স্মৃতি অনেক বৃদ্ধ লোক মনে করতে পারেন, যার ফলে কিছুক্ষণের জন্যে তিনি হারিয়ে যেতে পারেন মধুর শৈশবে। গানের সুর, ছন্দ ও কথাই এর কারণ।

কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে ‘সেইবই ডটকম’

boi

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সরকার সব রকমের উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে আমরা ইবুক নিয়ে কাজ করছি।

সেইবই ডট কম (sheiboi.com)-ও একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তাই সেইবই ধন্যবাদ পেতেই পারে। আগামীতে লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের নিয়ে এমন উদ্যোগের পাশে আমরা সবসময় থাকব।

রোববার সেইবই ডটকম এর ঈদ-পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসব বলেন।

গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব রোবায়েত ফেরদৌসের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেইবই ডটকম ও ৠাভেন সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাবিল উদ দৌলাহ।

তিনি বলেন, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের সকল প্রকার বই, সাময়িকী, গবেষণা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেবা ও পণ্যের সর্ববৃহৎ উৎস এবং আর্কাইভ হিসেবে কাজ করছে সেইবই। আপনাদের সহযোগিতায় ইবুক এর কাজ এগিয়ে চলছে। পর্যায়ক্রমে বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ সব বই-ই ইবুক করার ইচ্ছা আছে আমাদের।

ডার্ড গ্রুপের ফিন্যান্স ডিরেক্টর সেঁজুতি দৌলাহ বলেন, ডার্ড গ্রুপের একটি অন্যতম উদ্যোগ সেইবই। এটি আমাদের প্রাণের একটি প্রজেক্ট। আমরা চাই লেখক-কবিদের নিয়ে কাজ করতে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলা ভাষায় এমন একটি কাজ হচ্ছে জেনে আমাদের ভীষণ ভালো লাগছে। অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের বই বিপণনের ক্ষেত্রে সেইবই কাজ করে যাচ্ছে। পাঠকেরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো লেখকের বই সহজেই কিনতে পারছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, কবি আল মাহমুদ, আসাদ চৌধুরী, সেলিনা হোসেন, মুহাম্মদ নূরুল হুদা, কাইজার চৌধুরী, আনিসুল হক, আহসান হাবীব ও আন্দালিব রাশদী।

সাধারণের ম্যাজিক বাতি!

উদ্ভাবিত হয়েছে, ম্যাজিক বাতি। ম্যাজিক বলা এই কারণে যে, এই বাতি জ্বলবে শুধুমাত্র পানি ও দুই চামচ লবণে। এতে একটা ঘর পুরোপুরি আলোকিত হবে। আর একবার জ্বালালে জ্বলবে টানা আট ঘণ্টা!
শুধু তাই-ই নয়, চাইলে যে কেউই এই বাতি থেকে তার স্মার্টফোন চার্জ করিয়ে নিতে পারবেন। এ জন্য ইউএসবি পোর্ট ব্যবহার করতে হবে।

গবেষকেরা এই বাতির নাম দিয়েছেন- ‘সল্ট’ (Sustainable Alternative Lighting- SALT)। অর্থাৎ অব্যাহতভাবে জ্বলবে এমন বিকল্প বাতি।

গবেষকরা বলছেন, এই বাতি উদ্ভাবনের মূল উদ্দেশ্যে হলো, বিশ্বের এক বিলিয়ন মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ পান না। এই বাতি তাদের কাজে আসবে।তারা জানাচ্ছেন, যারা অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হন তারা এবং যাদের আলো ছাড়া স্কুল থেকে বাড়ি আসতে কিংবা অফিস থেকে বিপজ্জনক কেরোসিনের বাতি ব্যবহার করতে হয়, যাদের সেটাও কেনার সামর্থ্য নেই, তারা এই বাতি ব্যবহার করতে পারবেন।
এই ‘সল্ট’ বাতি চলে গ্যালভানিক সেল ব্যাটারিতে। এতে থাকে ইলেকট্রোলাইট দ্রবণ। এ ছাড়া ব্যাটারিতে দুটি ইলেকট্রোড থাকে। এই ব্যাটারিতে পানি এবং লবণ দিলে দ্রবণ তৈরি হয়। এই দ্রবণই বাতিতে আলো জ্বালতে সাহায্য করে।
গবেষকরা বলছেন, যখন ইলেকট্রোড দুটো ইলেকট্রোলাইটের স্পর্শ পায়, তখনই তা শক্তি উৎপন্ন করে এবং এলইডি (Light-emitting diode) বাল্বকে জ্বলতে সাহায্য করে।

তারা বলছেন, প্রতিদিন টানা আট ঘণ্টা হিসেবে ব্যবহার করলে ছয়মাস ব্যবহার করা যাবে এই ব্যাটারি। মোমবাতির পরিবর্তে এই বাতি সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারবেন।
নতুন উদ্ভাবিত এই ‘সল্ট’ বাতি ফিলিপাইনের বিভিন্ন দ্বীপে বসবাসকারী আদিবাসীদের পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হবে।
গবেষকরা আরো বলছেন, সমুদ্র উপকূলে বসবাসকারীরাও এই বাতি অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ, তাদের হাতের নাগালের মধ্যেই সমুদ্রের পাওয়া যায়। সমুদ্রের পানি বোতলে ভরে রেখে যে কোনো সময়, যে কোনোখানে এই বাতি ব্যবহার করা যাবে।
এই বাতি ২০১৬ সালে বাজারজাত করা হবে।
এদিকে, জানা গেছে, আরো একধরনের বাতি উদ্ভাবনের কাজ চলছে, যা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সাহায্যে চলবে। এই বাতির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘গ্রাভিটিলাইট’। তখন এই বাতির দাম একেবারেই হাতের নাগালের মধ্যে থাকবে, যা সাধারণ মানুষ সব সময় ব্যবহার করতে পারবেন।

মরুভূমির অমীমাংসিত রহস্য! পড়ুন কিছু সত্য কাহিনী…

maruvumi

মরুভূমির নাম শুনলেই সবার চোখে ভেসে ওঠে বালুময় এক প্রান্তরের কথা। যার ভেতরে নেই কোন বড় গাছ। কেবল আছে কিছু ছোটছোট ঝোপ আর প্রচন্ড গরম। খেজুর গাছ হয়তো কিছু খুঁজে পাওয়াও যেতে পারে, তবে পানি অনেকটা মরিচীকার মতন। যা কেবল মরিচীকাতেই উপস্থিত হয় চোখের সামনে। কিন্তু বিস্তীর্ণ এই বালুর ছড়াছড়ি ছাড়াও মরুভূমি এমন এক স্থান যেখানে রয়েছে হাজারটা রহস্যের খনি। এর বালুর পরতে পরতে লুকিয়ে আছে নিকষ অনেক রহস্য যার ভেদ করা যায়নি কখনোই। আসুন জেনে নিই এমন কিছু মরু রহস্যর কথা।

১. ফেয়ারি সার্কেল

নামিবিয়ার মরুভূমিতে খানিকটা হাঁটলেই কিছু জায়গা জুড়ে দেখা যায় গোল গোল চাকা। ২ থেকে ২০ মিটার অব্দি বাড়তে পারা এই গোলাকৃতির জিনিসগুলোর নাম দেয়া হয়েছে ফেয়ারি সার্কেল। কারণ এই সার্কেল বা চক্রের প্রান্তে এক ধরনের ঘাস জন্মাতে দেখা গেলেও এর মধ্যিখানে কোন ধরনের গাছ, ঘাস বা কোনকিছুই জন্মায় না। এমনকি অনেক যত্ন ও সার পাওয়ার পরেও না। বিজ্ঞানীদরা আজ অব্দি প্রাকৃতিক এই গোল চক্রগুলোর কোন রহস্য ভেদ করতে পারেননি। এদের বয়েস সর্বোচ্চ ৭৫ বছর হয়ে থাকে। ৭৫ বছর পর এমনিতেই অদৃশ্য হয়ে যায় গোলচক্রগুলো। তবে তার আগে কি করে এগুলোকে নেই করে দেওয়া যায় সেটা এখনো রহস্যই রয়ে গিয়েছে সবার কাছে।

২. অদ্ভূতুড়ে কবর

২০০৫ সালে তুতেনখামেনের সমাধিস্থলের পাশেই পাওয়া যায় আরেকটি সমাধিস্থল। সবাই অনেক আগ্রহ নিয়ে ভেতরে ঢোকে সেটার। কিন্তু কিছু কফিন ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি কবরটিতে। কোন মানুষের দেহও নয়। সব কফিনগুলো পাত্র, অলংকার সহ নানারকম জিনিসে ভর্তি থাকলেও একটার ভেতরে ছির আরেকটি কফিন। মনে করা হয় তখনকার কবর চোরদের থেকে বাঁচতে এই নকল কবর বানানো হয়েছিল। কিন্তু তাহলে সেগুলোতে কোন রাজকীয় সিল কেন ছিলনা? চোরদেরকে কি এতটাই বোকা ধরে নিয়েছিল তখনকার মানুষেরা? নাকি চোরদের জন্যে ছিলই না ওটা। অন্য কিছুর জন্যে বানানো হয়েছিল কবরটি? জানা যায়নি আজও। রহস্য রয়ে গেছে রহস্যই!

৩. সিরিয়ার ধ্বংসাবশেষ

২০০৯ সালের কথা সেটা। রবার্ট ম্যাসন সিরিয়ায় মরুভূমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ কিছু দালান কোঠার নজির আর নানারকম ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন তিনি। গিজার পিরামিডের বয়স ৪৫০০ বছর। আর এই ধ্বংসাবশেষের বয়েস হিসেব করা হয় ৬ থেকে ১০,০০০ বছর। সবচাইতে পুরোন শহর দামেস্কও এর কাছে নেহাত শিশু। বেশ কিছুদিন খোড়াখুড়ি চলে সেকানে। তবে আজ অব্দি জানা যায়নি মরুভূমির ভেতরে ওখানে কে এমন দালান-কোঠা বানিয়েছিল আর কেনইবা সেটা নষ্ট হয়ে গেল।

৪. আটাকামা নাইট্রেট

দক্ষিণ আমেরিকার মরুভূমি পৃথিবীর সবচাইতে শুষ্ক স্থান হিসেএ পরিচিত। যেখানে কেউ ছিল না এবং কেউ থাকেওনা। বলা হয় এ মিলিলিটার বৃষ্টি এখানে হলেও সেটা এর জন্যে অনেক। কিন্তু সাধারনত সেটাও হয়না। কিন্তু পানি ও সেই ব্যাকটেরিয়া যেটা দিয়ে নাইট্রেট তৈরি হয়- এগুলোর কোনরকম সাহায্য ছাড়াই এই মরুভূমির ভেতরে স্তুপ হয়েছে এবং হচ্ছে ৭০০ কি.মি লম্বা ও ২০ কি.মি চওড়া নাইট্রেট। আটাকামা মরুভূমি নামে পরিচিত এই মরুভূমির এই আটাকামা নাইট্রেটের জন্ম প্রশান্ত মহাসাগরের কোন এক স্থান থেকে মনে করা হলেও এই রহস্য এখনো ভেদ করা সম্ভব হয়নি।

তথ্যসূত্র-
10 unsolved desert mysteries- listverse.com

প্রকাশক রূপে ক্যারিয়ার গড়তে চান? জেনে নিন সফল প্রকাশকদের টিপস!

book pub

বই পড়তে কে না ভালোবাসে? কিন্তু আপনার হাতের একটুখানি এই বইটা ধরে কি বুঝতে পারছেন আপনি, আসলেই কি বোঝা যায় যে ঠিক কতটা পরিশ্রম রয়েছে এর পেছনে? লেখক, প্রকাশক, শিল্পী, ছাপাখানার নাম তো প্রথমেই আসে। তবে এর বাইরেও রয়েছে আরো অনেক কিছু। আরো অনেক মানুষ, অনেক শ্রম। যারা যে যার নিজের কাজটা সেরে অংশ নেন একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়ায়। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হয় একজনের আওতায়। আর তিনি হচ্ছেন প্রকাশক। সবার কাজকে কেটে-বেছে, তদারকি করে পাঠকের পাতে তুলে দেন তারা নির্ভেজাল একটি বই। বই অনেকেই প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু ইচ্ছে করলেই একজন ভালো প্রকাশক হওয়া যায়না। তাহলে ঠিক কী কী দরকার একজন বড় মাপের প্রকাশক হতে গেলে? দেয়া হলো আজকের এই ফিচারে।

১. বইয়ের প্রতি ভালোবাসা

বইয়ের প্রতি ভালোবাসা থাকাটা বই প্রকাশ করার অন্যতম প্রধান একটি শর্ত। বই ভালো না বাসলে ভালো বই প্রকাশ করা সম্ভব নয় একেবারেই। এ প্রসঙ্গে অন্বেষা প্রকাশনের সত্ত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন প্রিয়.কমকে বলেন– বই এর প্রতি ভালোবাসাটাই আসল ব্যাপার। নিজে ভালোবেসে কিছু না করলে অন্যদের কাছ থেকেও আশাতীত ভালোবাসাটা পাওয়া যায়না।

বই প্রকাশ করার আগে নিজেকে পাঠক করে তুলতে হবে বলে মনে করেন জাগৃতি প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন। কারণ তাহলেই একমাত্র পাঠকের মনোভাব ও তাদের চাহিদানুযায়ী বই প্রকাশ করা সম্ভব হবে। প্রিয়.কমকে তিনি বলেন- উন্নতমানের পাঠক না হলে পাঠককে উন্নতমানের বই উপহার দেওয়া যায়না।

২. ধৈর্য্য

ভালো প্রকাশক হতে গেলে দরকার হয় প্রচন্ড রকমের ধৈর্য্য। এ নিয়ে শাহাদাত হোসেন প্রিয়.কমকে জানান- এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অনেক অনেক সময়ের দরকার হয় এতে। একদিক দিয়ে ব্যাবসা হলেও এটা আর দশটা ব্যাবসার মতন নয়। এখানে কোন একটা কাজের ফলাফল পেতে যথেষ্ট সময় দিতে হয়। আর তাই ধৈর্য্যটা খুবই দরকারী।

ভালো মানের বই বাছাই এর জন্যে পান্ডুলিপি নিজে পড়ে বাছাই করাটাকে অন্যতম প্রধান কাজ মনে করেন ফয়সাল আরেফিন দীপন। তিনি নিজেও ধৈর্য্য ধরে প্রতিটি পান্ডুলিপি পড়ার পরেই বই বাছাই করেন।

৩. সদালাপী

ভালো মানুষ হবার জন্যে সদালাপী হওয়াটা আবশ্যক। আর এটা আবশ্যক ভালো প্রকাশক হবার ক্ষেত্রেও। সবার সাথে যোগাযোগ রেখে, সবার সুযোগ-সুবিধা দেখে, সবার প্রাপ্য ঠিকমতন বুঝিয়ে দেওয়ার পেছনেও অনেকটা নির্ভর করে প্রকাশক হিসেবে ভালো করার সম্ভাবনা।

৪. সম্পাদনার জ্ঞান

ভালো মানের প্রকাশক হতে গেলে উপরের আর সবকিছুর সাথে সাথে দরকার হয় ভালো সম্পাদনা জ্ঞানেরও। আর এ জন্যে দরকার পড়বে ভালো বাংলা ও বাংলা সাহিত্য সম্পর্কে জানা।

ঘুম আসে না রাতে? জেনে নিন মাত্র ১ মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়ার কৌশল

Sleep

ঘুম না আসা খুবই যন্ত্রণাকর একটি ব্যাপার। বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করা এবং ঘড়ির দিকে তাকিয়ে রাত পার করার যন্ত্রণা যারা ভুক্তভুগি তারাই বলতে পারবেন। ঘুম না হওয়ার সবচাইতে প্রথম ও প্রধান কারণ হচ্ছে মন অস্থির থাকা। আর মন অস্থির হয়ে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানসিক চাপ। মানসিক চাপ হওয়ার কারণে ঘুম আসতে চায় না একেবারেই।

Byrdie এর লেখিকা অ্যালিনা গঞ্জালেস, বলেন ‘একধরণের শ্বাস প্রশ্বাসের বিশেষ ব্যায়াম রয়েছে যা ঘুমাতে অনেক বেশী সহায়ক। এই পদ্ধতিটির নাম ৪-৭-৮ মেথড। যারা অনিদ্রা সমস্যায় ভোগেন তারা এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করে অনেক ভালো ফলাফল পেয়েছেন’। চলুন তাহলে শিখে নেয়া যাক চমৎকার এই পদ্ধতিটি যার মাধ্যমে মাত্র ১ মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন আপনি।

নিঃশ্বাসের ব্যায়াম

  • – প্রথমে ৪ সেকেন্ড নাক দিয়ে খুব ভালো করে শ্বাস নিন।
  • – এরপর ৭ সেকেন্ড দম ধরে রাখুন। শ্বাস ছাড়বেন না।
  • – তারপর ৮ সেকেন্ড ধরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন।
  • – এভাবে কয়েক বার করুন এবং ঘুমুতে যান।

কেন এই প্রক্রিয়াটি কার্যকরী?

অনেকেই ভাবতে পারেন এই প্রক্রিয়াটি কেন কাজে দেবে বা এই প্রক্রিয়ায় কেন ১ মিনিটের মধ্যে ঘুম চলে আসবে। এই বিশেষ ধরণের নিঃশ্বাসের পদ্ধতিতে শুধুমাত্র আপনার ফুসফুসের উপরে প্রভাব ফেলে না এই পদ্ধতিতে মস্তিষ্কের উপরেও কাজ হয় যা ঘুমাতে সহায়তা করে। আপনি যখন শুয়ে ঘুম না আসা নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন এবং অপেক্ষা করেন তখন আরও বেশী মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় যা আরও বেশী ব্যাঘাত ঘটে। কাম ক্লিনিকের গবেষক বলেন যখন আমরা দুশ্চিন্তা করি এবং চিন্তা করতে থাকি তখন আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব ঘটে। এতে করেই অনেক বেশী ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে। যখন এই ৪-৭-৮ নিঃশ্বাসের ব্যায়ামটি করা হয় তখন অক্সিজেন আমাদের মস্তিষ্কে ভালো করে পৌছায়। যখন আপনি ৪ সেকেন্ড শ্বাস নেন তক্ষন তা আপনাকে শান্ত করে এবং যখন ৭ সেকেন্ড দম ধরে থাকেন তখন মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌছায়। এরপর আপনি যখন দম ছাড়েন তখন আপনার দেহ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড দূর হয়ে যায়। এতে আপনার হার্টবিটও কমে আসবে এবং আপনার দুশ্চিন্তা কমে আসবে। আপনার দেহ ও মন রিলাক্স হবে। আর এ কারণেই ঘুমের উদ্রেক ঘটে। চেষ্টা করেই দেখুন না।