৩টি খাবার আপনার লিভারকে পরিষ্কার রাখবে

3 food

লিভার মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির লিভারের ওজন ৩ পাউন্ড। দেহের এই লিভার অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত। যেমন- হজম শক্তি, মেটবলিজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, দেহে পুষ্টি যোগানো ইত্যাদি। সুস্থ লিভার দেহের রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করে, রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়, দেহের সকল অংশে পুষ্টি যোগায়। এছাড়াও লিভার ভিটামিন, আয়রন এবং সাধারণ সুগার গ্লুকোজ সংরক্ষন করে।

যেহেতু লিভার আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ তাই যে কোন উপায়ে একে সুস্থ সবল রাখতে হবে। অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন দেহের লিভারের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, দীর্ঘ সময় ক্লান্তি অনুভব করা, হজমের সমস্যা, এলার্জি ইত্যাদি এই সমস্ত অসুখ দেখা দিতে পারে অসুস্থ লিভারের কারণে। তাই দেহ ও লিভার সুস্থ রাখার জন্য চিনে নিন এমন কিছু খাবার আছে যা সুস্থ রাখবে আপনাকে।

রসুন
লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য উত্তম খাবার হল রসুন। রসুনের এনজাইম লিভারের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান পরিষ্কার করে। এতে আছে আছে আরও দুটি উপাদান যার নাম এলিসিন এবং সেলেনিয়াম যা লিভার পরিষ্কার রাখে এবং ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান হতে রক্ষা করে।

১। প্রতিদিন যে কোন সময় ২/৩ টি রসুনের কোয়া খেয়ে নিন।

২। আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রসুন দিয়ে তৈরি ভিটামিনও খেতে পারেন।

লেবু
লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান দেহের লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং ডি লিমনেন উপাদান লিভারে এনজাইম সক্রিয় করে। তাছাড়া লেবুর ভিটামিন সি লিভারে বেশি করে এনজাইম তৈরি করে যা হজম শক্তির জন্য উপযোগী। লেবুর মিনারেল লিভারের নানান পুষ্টি উপাদানগুলো শোষণ করার শক্তি বৃদ্ধি করে। বাসায় লেবুপানি পান করুন এবং যেকোন সময় পানের জন্য লেবুপানি বানিয়ে রাখুন। প্রতিদিন লেবুপানি পান করুন, চাইলে মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন।

আপেল
প্রতিদিন ১ টি করে আপেল খেলে তা লিভারকে সুস্থ রাখে। আপেলের পেক্টিন, ফাইবার দেহের পরিপাক নালী হতে টক্সিন ও রক্ত হতে কোলেস্টরোল দূর করে এবং সাথে সাথে লিভারকেও সুস্থ রাখে। আপেলে আছে আরও কিছু উপাদান- ম্যালিক এসিড যা প্রাকৃতিক ভাবেই রক্ত হতে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে। যেকোন ধরণের আপেলই দেহের লিভারের জন্য ভালো। তাই লিভার সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ১ টি করে আপেল খান। –

বাংলাদেশ ব্যাংককে র‌্যাবের চিঠি: বিকাশের মাধ্যমে চলছে চাঁদাবাজি মাদক ও অস্ত্র কেনাবেচা

bkash

ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে খুন-হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি হচ্ছে। সম্প্রতি র‌্যাব সদর দফতর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়টি অবহিত করে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এই চিঠির ওপর ভিত্তি করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ইদানীং দেশের অভ্যন্তরে খুন-হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজি, অবৈধ মাদকদ্রব্য ও অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা ইত্যাদি অপরাধ বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ সকল অপরাধ পর্যালোচনা করে বিকাশসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রসার এবং এর মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদান সহজ হওয়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহিৃত করেছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, যারা মোবাইল ব্যাংকিং করছে তাদের মধ্যে বিকাশের কার্যক্রম বেশি। এ কারণে এদের মাধ্যমে অপরাধও হয়তো কিছুটা বেশি সংঘটিত হচ্ছে। বিষয়টি জানিয়ে র‌্যাব থেকে আমাদের একটা চিঠি দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অপরাধ কমাতে করণীয় নির্ধারণ করতে খুব শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠক করব।

চিঠিতে বলা হয়েছে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের রেজিস্ট্রেশন দ্রুততর সময়ে সম্পন্ন করা, ভুয়া আইডির মাধ্যমে এ্যাকাউন্ট খোলা এবং খুব সহজে অর্থ আদান-প্রদান করতে পারার কারণে অপরাধীরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ, এমক্যাশ, ইউক্যাশ) মাধ্যমে আদান-প্রদান করে। এক্ষেত্রে এ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন ফরমে যে ঠিকানা দেওয়া হয় তা সঠিক নয়। ফলশ্রুতিতে অপরাধীদের খুঁজে বের করা এবং অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রমাণ করার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এমতাবস্থায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ, এমক্যাশ, ইউক্যাশ ইত্যাদি) মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা এবং গ্রাহক সম্পর্কে সঠিক তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ রয়েছে।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এই মুহূর্তে জঙ্গিসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছি। তাই অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে কথা বলতে পারব না।

র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমান পদ্ধতিতে গ্রাহক সম্পর্কে সঠিক তথ্য এবং গ্রাহকের সঠিক ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয় না। এ অবস্থায় এ্যাকাউন্ট খোলার পর মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি একটি প্রাথমিক কোড কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পাঠাতে পারে। ওই কোড নম্বর মোবাইলের মাধ্যমে কোম্পানির সার্ভারে পাঠানো হলে এ্যাকাউন্টের পিন নম্বর গ্রাহকের পক্ষে নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।

চিঠিতে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের (বিকাশ, এমক্যাশ, ইউক্যাশ ইত্যাদি) মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদানকারীকে সহজে শনাক্ত করার জন্য এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে গ্রাহকের ছবি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সেখানে এ্যাকাউন্ট খোলা ও অর্থ লেনদেনের সময় গ্রাহকের ছবি তোলার ব্যবস্থা রাখতে অনুরোধ করা হয়।

এ ছাড়া এজেন্টদের নতুন এ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে জেলা, স্থান, এলাকার পরিধি নির্ধারণ করা যেতে পারে, যাতে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে এজেন্টরা কোনো একাউন্ট খুলতে না পারে। একই সঙ্গে কোনো গ্রাহক নিজ এলাকার বাইরের কোনো স্থানে নতুন এ্যাকাউন্ট খুলতে সক্ষম হবেন না। ফলে গ্রাহকদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলেও চিঠিতে বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিকাশের জনসংযোগ বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করছি। এর বেশি কিছু পারছি না।

র‌্যাবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ আগস্ট পাঁচ হাজার টাকার উপরে লেনদেন করলে গ্রাহকের ছবি তুলে রাখার নির্দেশনা প্রদান করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে মঙ্গলবার এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ ছাড়া গ্রাহকের তথ্যাবলীর (কেওয়াইসি) সঙ্গে মিল রেখে মোবাইল সিম আগামী ছয় মাসের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সকল কার্যক্রম নিরাপদ ও কার্যকর করার লক্ষ্যে এ খাতে ব্যবহৃত সকল গ্রাহকের সিম ও কেওয়াইসিতে প্রদত্ত তথ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।

দেশে বর্তমানে ৫৬টি তফসিলি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার মধ্যে ২৮টি ব্যাংক মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস দেওয়ার জন্য অনুমোদন নিলেও সেবা দিচ্ছে ২০টি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার সিম ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য নিবন্ধন নিয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ২২ লাখ ৩৪ হাজার সিম সচল রয়েছে। আর এজেন্ট হিসেবে নিবন্ধন নিয়েছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৭০টি সিম।

সর্বশেষ জুন মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সারাদেশে মোট ১২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আর দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ৩২ লাখ ৫ হাজার ৩১০টি।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা আরও ৫ বছর করমুক্ত থাকতে চান

e commerce

আরও পাচঁ বছর করমুক্ত রাখতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উদ্যোগে ‘ই-কমার্স খাতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় ব্যবসায়ীরা এ দাবি জানান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে মেট্রোনেট বাংলাদেশের সি.ই.ও সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, ‘সরকার এ অর্থবছরের বাজেটে ই-কমার্স খাতে করারোপ করলেও পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আমরা চাই আরও পাচঁ থেকে ছয় বছর এ খাতকে করমুক্ত রাখা হোক।’

অনুষ্ঠানে ই-ক্যাপের প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে ১ শতাংশ মানুষ ই- কমার্সে লেনদেন করে। অচিরে এটি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। তখন মার্কেটের আকার বড় হবে। এ কারণে এখন থেকে সরকারকে পলিসি সাপোর্ট দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এস.এম.ই খাতের মহাব্যবস্থাপক স্বপন কুমার বলেন, ‘বাংলাদেশে ই-কমার্সের ধারণা ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। এটাকে মাথায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সময় সহায়ক নীতি গ্রহণ করেছে। আগামীতে আরও নেওয়া হবে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের টেলিযোগাযোগ, তথ্য- প্রযুক্তি ও মেধাস্বত্ব অধিকার বিষয়ক স্থায়ী কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ আলমাস কবির।

বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিতে আসছে ফেসবুক ড্রোন ‘একুলা’

M Jukar

বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিতে আসছে ফেসবুক ড্রোন একুলা (Aquila) । মনুষ্য বিহীন এই ড্রোন আকাশ থেকেই দূরবর্তী মানুষের কাছে পৌঁছে দিবে ইন্টারনেট। ফেসবুক নির্মাতা মার্ক জুকারবার্গ ও তার দলের নিরলস প্রচেষ্টায়ে সফল হতে যাচ্ছে এমন ই এক ড্রোন ।
মার্ক জুকারবার্গ আজ তার-ই ফেসবুক টাইমলাইনে প্রকাশ করলেন সেই ড্রোনের একটি পাখা সহ তার একটি ছবি। এর আগে ৩০ জুলাই প্রকাশিত জুকারবার্গ তার পোষ্টে উল্লেখ করেন এটি ইন্টানেট অর্গানাইজেশনেরই একটি অংশ। একুলা নামের এই ড্রোন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিবে ইন্টারনেট সেবাকে।

Dron
আজকের পোষ্টটিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, এই ড্রোন তৈরিতে তাদের কতটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে । তাদের ডিজাইন করা এই ড্রোনটি মাটি থেকে ৬০ হাজার ফুট উঁচুতে কয়েক মাস সময় ভেসে বেড়াতে পারবে। তাদের চ্যালেঞ্জের আর একটি বিষয় ছিল ড্রোনটিকে আরো হালকা ও কার্যকারী বানানো। তাই এই ড্রোনের এয়ারফ্রেম তৈরি করা হয়েছে কার্বন ফাইবার দিয়ে, যা কিনা স্টিল এর চেয়ে বেশি শক্ত কিন্তু স্টিল এর চেয়ে হালকা ।
এই ড্রোন টির পাখার প্রসারতার দৈর্ঘ্য বোয়িং ৭৩৭ এর সমান হলেও এটি একটি গাড়ির চেয়েও হালকা বলে উল্লেখ করেন জুকারবার্গ। তিনি আরো বলেন, এটি একটি যাত্রীবাহী জেট এর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ উচ্চতায় উড়বে এবং সৌর ও ব্যাটারি থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি রূপান্তর করবে।
উল্লেখ্য যে, এই ড্রোন টি ফেসবুক গবেষনাগারেই তৈরি হয়েছে এবং এটিকে বানানোর জন্য যুক্তরাজ্যের একটি ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে এক দল ইঞ্জিনিয়ার ভাড়া করা হয়।

এই লিংক-এর মাধ্যমে ভিডিও দেখুন: ফেসবুক ড্রোন ‘একুলা’

‘প্রোগ্রামিং জানাটাই একটি সার্টিফিকেট’

Jakir_Hossain

জাকির হোসেন : ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার জন্য অনেকগুলো ফিল্ড রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো করার জন্য রয়েছে অনেকগুলো উপায়। সব কিছুর আগে যেটা দরকার, তা হচ্ছে একটা বিষয়ে দক্ষতা। অনেকগুলো বিষয় রয়েছে, আমি বলব প্রোগ্রামিং নিয়ে।

পৃথিবীর প্রায় সব কিছুই এখন কম্পিউটার নির্ভর। মোটামুটি সবাই জানি কম্পিউটার নিজ থেকে কিছু করতে পারে না। তাকে যা করতে বলা হয় বা ইন্সট্রাকশন দেওয়া হয়, তাই করতে পারে। ইন্সট্রাকশনগুলো দেওয়া হয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে।

প্রোগ্রামিং কতটা পাওয়ারফুল তা আমাদের কল্পনারও বাহিরে। যে প্রোগ্রামিং জানবে, সে নতুন একটা পৃথিবী তৈরি করে ফেলতে পারবে। তৈরি করা যাবে নতুন একটা ভার্চুয়াল মহাবিশ্ব। আমরা কম্পিউটার গেমস খেলি, ছবি আঁকি, ওয়ার্ডে কিছু লিখি, ইন্টারনেট ব্রাউজার দিয়ে গুগল, ফেসবুকের মত সাইটে ভিজিট করি এমন সব কিছুই প্রোগ্রামিং ব্যবহার করে তৈরি। এগুলোর পেছনে অনেকগুলো কোড কাজ করছে।

প্রোগ্রামিং জানলে ক্যারিয়ার সম্পর্কে আর চিন্তা করতে হয় না। এমনকি সাধারণ অন্যান্য চাকরি করার জন্য দরকার সার্টিফিকেট। আর প্রোগ্রামিং জানাটাই হচ্ছে একটি সার্টিফিকেট। অনলাইনে এবং অফলাইনে হাজার হাজার জব পড়ে আছে, যে প্রোগ্রামিং জানে তার জন্য।

সফল মানুষ তখনই হতে পারে যখন মানুষের কোনো বিষয়ের প্রতি আকাঙ্ক্ষা থাকে। আর ঐ আকাঙ্ক্ষা পূরণ হওয়াটা হচ্ছে সফলতা। সফল যদি হতে হয়, তাহলে সবার আগে যেটা দরকার তা হচ্ছে আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছে বা স্বপ্ন। প্রোগ্রামার হওয়ার ইচ্ছে, বা বড় হয়ে গেমস তৈরি করার ইচ্ছে, সফটওয়ার তৈরি করার ইচ্ছে থাকলে একদিন তা পূরণ হবে। আর ঐ সব ইচ্ছে পূরণ করার জন্য দরকার প্রোগ্রামিং শেখা।

প্রোগ্রামিং শেখার শুরুর দিকে অনেকেই বিশাল বই দেখে হয়তো ভয় পেয়ে যায়। এত বিশাল বই, এত্ত কিছু শিখতে হবে। এত কিছু জানতে হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। বইগুলো বিশাল হওয়ার কারণ একটু পরেই বলছি। তবে জিনিসটা অবশ্যই এমন নয়। বিশাল বই পড়ে কিছুই মনে রাখতে হয় না। মুখস্ত করতে হয় না কিছু। শুধু জানতে হয় কীভাবে প্রোগ্রাম লিখতে হয়। কোনো সিনট্যাক্স মুখস্ত করতে হয় না। শুধু জানতে হয় কীভাবে লিখে।

প্রোগ্রামিং হচ্ছে লজিক। আমরা বাস্তব জীবনে যেমন লজিক খাটাই, তেমন লজিক। এগুলো মুখস্ত করতে হয় না। শুধু গুছিয়ে চিন্তা করতে হয়। শুধু জানতে হয় কীভাবে গুছিয়ে চিন্তা করা যায়। একটা উদাহরণ দিই, যেমন ‘যদি আজ শুক্রবার হয়, স্কুলে যেতে হবে না। যদি শুক্রবার না হয়, স্কুলে যেতে হবে।’ – এ জিনিসটা আমরা ঠিক যেভাবে চিন্তা করেছি, প্রোগ্রামিংয়ে ঠিক এমনি। এটাকে যদি আমরা সুডো কোডে লিখি তাহলে:

if day=friday
no school, do furti.
else
go to schlool.
এতই সহজ প্রোগ্রামিং।

বইগুলো বিশাল হয় কারণ ঐখানে প্রোগ্রামিং করে কী কী করা যায়, এমন অনেকগুলো উদারহণ দেওয়া থাকে। দেওয়া থাকে অনেক লাইব্রেরির ব্যবহার প্রনালী। তো এসব শুধু একবার পড়লেই হয়। না পড়লেও সমস্যা হয় না। যদি পড়া থাকে, তাহলে প্রোগ্রাম লিখতে দারুণ কাজে দেয়। যেহেতু আমাদের কোড মুখস্ত করতে হয় না, আমরা বই এর ঐ অংশ থেকে দেখে দেখেই লিখে ফেলতে পারি।

আর কোডগুলো লেখা হয় IDE ব্যবহার করে। ওপরে আমরা if else দিয়ে একটা প্রোগ্রাম লিখছি। IDE গুলো i লেখার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝে যায় আমরা কী লিখতে যাচ্ছি, বাকি কোডগুলো অটোমেটিক লেখা হয়ে যায়। সত্যিই অসাধারণ। শুধু একবার শুরু করতে হবে। কিছু সময় ব্যয় করতে হবে। এই যা।

প্রোগ্রামিং শেখার জন্য বই এর দুই একটা চ্যাপ্টার ঠিক মত পড়লেই হয়, সিনট্যাক্সগুলো জানলেই হয়। বাকিটা যে যার মত করে লিখে ফেলতে পারে। নিজ নিজ ক্রিয়েটিভিটি প্রয়োগ করে। আর আমাদের সবার ক্রিয়েটিভিটি ইউনিক।কারোটা দিয়ে কারোটা রিপ্লেস করা যায় না। আমরা অনেকেই জানি না, আমরা কতটা ক্রিয়েটিভ। আর তা জানতে হয়, আর জানার জন্য চোখ বন্ধ করে না থেকে একটু চারপাশ তাকাতে হয়।

প্রোগ্রামিং এর সবচেয়ে মজার পার্ট বলি। একটা বাস্তব উদাহরণ দিয়ে বলি। ধরে নিচ্ছি, আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টাওয়ারটা বানাবো। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং কোনটা? সম্ভবত Burj Khalifa, তাই না? ১৬৩টি ফ্লোর রয়েছে। আমরা চাচ্ছি এর থেকেও বিশাল একটা বিল্ডিং বানাতে, যার মধ্যে ২০০টি ফ্লোর থাকবে। তো বাস্তবে জিনিসটা বানাতে আমাদের নতুন করে গ্রাউন্ড লেভেল থেকে শুরু করতে হবে। অনেক বছর লেগে যাবে। প্রোগ্রামিংয়ে কেউ যদি ১৬৩ তলা সমান একটা প্রোগ্রাম বানিয়ে রাখে, আমরা চাচ্ছি ২০০ তলা সমান একটা প্রোগ্রাম বানাতে, তখন আমরা ১৬৩ তলা থেকেই কাজ শুরু করতে পারব। শুরু থেকে কিছুই করতে হবে না। কত সময় বেঁচে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে দারুণ কিছু। চমৎকার না?

প্রোগ্রামিং জানা সত্যিই চমৎকার। প্রোগ্রামিং মানুষের চিন্তা শক্তি বাড়িয়ে দেয়। চিন্তা করা মানে হচ্ছে, নতুন কিছু করা। আমাদের পাওয়ারফুল যে একটা মস্তিষ্ক রয়েছে তার সঠিক ব্যবহার করা। যারা প্রোগ্রামিং জানে, আর যারা প্রোগ্রামিং জানে না তাদের চিন্তা করার পদ্ধতি ভিন্ন। প্রোগ্রামিং আমরা কীভাবে চিন্তা করি, তাই পরিবর্তন করে দেয়। আমাদের চারপাশ নিয়ে নতুন ভাবে ভাবতে শেখায়।

অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে শেখার জন্য। যেহেতু অনেকগুলো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে শেখার জন্য, তখন চিন্তা আসে কয়টা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে হবে বা কোনটা শিখব।

কয়টা ভাষা শিখব বা কোন ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করব- এ দুইটা প্রশ্ন নিয়ে অনেক সময় নষ্ট করে ফেলে নতুনরা। অবশ্যই একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করতে হবে। একটা ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করলে নিজের সব ফোকাস একটার মধ্যেই থাকবে। সহজেই শেখা যাবে। কোনটা দিয়ে শুরু করবেন, তা নিজের ইচ্ছে। যেটা ভালো লাগে। তা যদি পছন্দ না করতে পারেন তাহলে পাইথন বা সি/সি++ দিয়ে শুরু করতে পারেন। শুরু করার পর আপনি প্রোগ্রামিং কী, কীভাবে করে, কীভাবে লজিক্যাল চিন্তা করা যায় এসব জানা যাবে। এরপর এসব জানতে জানতে এক সময় জানা যাবে কীভাবে গেমস তৈরি করা যায়, কীভাবে মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা যায়, কীভাবে সফটওয়ার তৈরি করা যায় ইত্যাদি। এসব যখন জানা যাবে, তখন এত্ত এত্ত জব পেছনে ঘুরঘুর করবে যে, তখন শেষ করেই কুল পাওয়া যাবে না। যারা প্রোগ্রামিং জানবে, তাদের অপেক্ষা করছে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার। সেরা একটি ভবিষ্যৎ।

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে গেলে কিছু কিছু অসুবিধায় পড়তে হতে হয়। আমি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু বলি:

মাঝে মাঝে অনেকগুলো বিড করেও কাজ পাওয়া যায় না। তখন কেমন মন খারাপ হয়ে যায়। আবার মাঝে মাঝে যে কয়টা বিড করি, সবগুলোতেই কাজ পেয়ে যাই। তখন এক সঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে হয়। খাওয়া দাওয়ার কথাও ভুলে যেতে হয়।

চ্যালেঞ্জিং কাজগুলো নিয়ে দেখা যায় একটানা পরিশ্রম করেও কোনো আউটপুট পাওয়া যায় না। যতটুকু পেমেন্ট দেওয়ার এগ্রিমেন্ট হয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি পরিশ্রম হয়। যদিও এতে একটা সুবিধে হয়, যেমন অনেক কিছু শেখা যায়। শেখাটাই আবার অন্য প্রজেক্টে কাজে লাগে।

মার্কেটপ্লেসে কাজ করলে একটা সুবিধে হচ্ছে পেমেন্ট এর নিশ্চয়তা। কাজ কমপ্লিট করে দিতে পারলে পেমেন্ট পাওয়া যাবেই। তাই কাজ করে দিয়েছি, পেমেন্ট পাওয়া যায় নি, এমন হয়নি কোনো দিন। মার্কেটপ্লেসে ফিডব্যাক গুরুত্বপূর্ণ। ক্লায়েন্ট যেন খুশি থাকে, সে দিকে সব সময়ই নজর রাখতে হয়। তাই মাঝে মাঝে খারাপ ক্লায়েন্ট পড়লে তারা যা বলে, তা শুনে কাজটা শেষ করতে হয়। এমন ক্লায়েন্ট খুব কমই থাকে, যে এগ্রিমেন্ট এর বাহিরে কাজ করিয়ে নেয়। তবে বেশির ভাগ ক্লায়েন্টই ভালো। যদি বাড়তি কাজ করিয়ে নেয়, তাহলে তার জন্য এক্সট্রা পেমেন্ট দিয়ে দেয়।

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে যেটা সবচেয়ে ভালো লাগে, তা হচ্ছে বোনাস পাওয়া। ক্লায়েন্ট কাজে খুশি হয়ে মাঝে মাঝেই এগ্রিমেন্ট পেমেন্ট থেকে বেশি পেমেন্ট করে। কিছু কিছু খারাপ হবে, কিছু কিছু ভালো হবে। এটা নিয়েই তো মানুষের জীবন। ফ্রিল্যান্সিং এ একই। খারাপ ভালো সব মিলিয়ে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার।

লেখক : প্রোগ্রামার ও ফ্রিল্যান্সার

ঘরেই যখন বিউটি পার্লার: বিস্তারিত খোঁজখবর

পার্লার ট্রিটমেন্ট সম্ভব এখন ঘরে বসেই। এ লক্ষ্যেই বিউটি টেকনোলজি ব্র্যান্ডগুলো বাজারে এনেছে হরেক রকম ডিভাইস। ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ত্বক ঠিক রাখতে সাহায্য করে বিউটি ট্রিটমেন্ট ডিভাইসগুলো। বাজার ঘুরে এসব ডিভাইসের খোঁজ জানাচ্ছেন মারজান ইমু

জ্যাম ঠেলে আর পার্লারে ছুটতে হবে না। ফেসিয়াল, মেনিকিউর, পেডিকিউর, হেয়ার স্পা-সবই হবে ঘরে বসে। প্রয়োজন কিছু যন্ত্রপাতি। না, পার্লারের মতো অত বড় যন্ত্রপাতি লাগবে না। পার্লারে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলোর ক্ষুদ্র সংস্করণ কিছু ডিভাইস আকারে পাবেন বাজারে। ব্যবহার সহজ এবং বেশ কার্যকর। ছেলেমেয়ে সবাই প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারেন। এসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্ট বিক্রেতারা। তাঁরা জানান, ‘প্রফেশনাল বিউটি মেশিনারিজগুলো অনেক দিন থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। ঘরে ব্যবহার করার মতো এই ডিভাইসগুলো একই প্রযুক্তিতে তৈরি। চীন, জাপানের বিখ্যাত টেকনোলজি ব্র্যান্ড এসব ডিভাইস তৈরি করে। তাই পার্লারের মতোই এ ডিভাইসগুলো নিরাপদ। অনেক পার্লারেও এসব সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এখন।’

ঘরেই যখন বিউটি পার্লার

কোথায় মিলবে

এ ধরনের বিউটি ডিভাইসগুলো সহজলভ্য নয়। ঢাকার বড় বড় শপিংমলে পার্লারে ব্যবহারের বিভিন্ন পণ্য পাওয়া যায়। তবে যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় কেবল ঢাকার গাউসিয়া মার্কেট এবং এর পাশে অবস্থিত গোল্ডেন প্লাজা সুপার মার্কেটে। এ ছাড়া পুরান ঢাকার চকবাজারেও কিছু পাইকারি বিউটি মেশিনারিজের শো-রুম রয়েছে। এসব শো-রুমে প্রফেশনাল যন্ত্রপাতির পাশাপাশি এসব বিউটি ডিভাইস পাবেন।

হাই ফ্রিকোয়েন্সি

ঘরেই যখন বিউটি পার্লার

এই ডিভাইসে বেশ কয়েকটি কিট রয়েছে। বিশেষ ধরনের আলোকরশ্মি ব্যবহার করা হয় এতে। প্রতিটি কিটেরই ব্যবহার আলাদা। ম্যাসাজার দিয়ে ম্যাসাজ করলে ত্বকের বলিরেখা দূর হয়। জেল প্রাইমার লাগিয়ে ত্বকের নিচ থেকে ওপর দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করুণ আধা মিনিট। হালকা গরম ভেজা কাপড় দিয়ে জেল মুছে নিন। ময়েশ্চারাইজার লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে অতি সূক্ষ্ম বলিরেখাও উধাও হয়ে টান টান হবে ত্বক। এ ছাড়া হোয়াইট হেডস দূর করার জন্য রয়েছে আলাদা কিট। ব্রণের জন্য পাবেন ব্রণ রিমুভার। ব্রণের ওপর এই কিট স্পর্শ করলে কাঁচা ব্রণও নিমিষেই পেকে বের হয়ে যাবে। ব্রণের দাগও হবে না। চিরুনির মতো একটা কিট পাবেন স্কাল্প ম্যাসাজের জন্য। এতে চুলের গোড়ার রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। নিয়মিত ব্যবহারে চুল পড়া কমে যায়, আর খুশকি ঝরে যায়। অনেক কাজের কাজী এই যন্ত্রটি পেতে হলে খরচ পড়বে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

ফেসিয়াল স্টিম মেশিন

ঘরেই যখন বিউটি পার্লার

সব ধরনের ফেসিয়ালেই স্ক্রাবিংয়ের আগে ত্বকে স্টিম বা গরম পানির ভাপ দেওয়া হয়। এতে ত্বকের লোমকূপ খুলে যায় আর জমে থাকা ময়লা নরম হয়। ফলে স্ক্রাবিংয়ের শত ভাগ সুফল পাওয়া যায়। ঘরে বসেও স্টিম থেরাপি নেওয়া যায়। তবে সেটা বেশ ঝামেলার আর বিপজ্জনকও। এই স্টিম ডিভাইসটি দিয়ে ঘরে বসে ঝামেলাহীন গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। ব্যবহার প্রসঙ্গে অভিজাত কসমেটিকসের বিক্রেতা সারোয়ার আলম জানান, ডিভাইসটির সঙ্গে একটি পানির ফিল্টার যুক্ত থাকে। ফিল্টারে পানি দিয়ে ইলেকট্রিসিটি অন করলেই পাবেন স্টিম। এর বাষ্প খুব হালকা ও সহজেই ত্বকের গভীরে পৌঁছে যায়। আকারে বেশ ছোট আর সহজে বহনযোগ্য। বেশ কয়েকটি মডেল পাবেন। ব্র্যান্ডভেদে দাম পড়বে দুই থেকে আট হাজার টাকা।

আল্ট্রাসনিক মেশিন

ঘরেই যখন বিউটি পার্লার

চোখের নিচের ফোলা ভাব থাকলে মেকআপের সময় বেশ মুশকিল হয়। এখন এর ট্রিটমেন্ট সম্ভব ঘরে বসেই। আল্ট্রাসনিক মেশিন অন করে চোখের নিচে বুলিয়ে নিলেই হলো। নিমিষেই ফোলা ভাব উধাও, কোনো রকম ত্বকের অস্বস্তি ছাড়াই। আরাফাত কমমেটিকস-এর ব্যবস্থাপক আতাউল্লাহ হীরা আল্ট্রাসনিক মেশিন সম্পর্কে আরো জানালেন, শুধু চোখের ফোলা ভাব নয়, সাইনাসের মাথাব্যথায়ও এই ডিভাইস বেশ উপকারী। আল্ট্রাসনিক মেশিন দিয়ে কপালে হালকা করে ম্যাসাজ করলে মাথাব্যথা কমে যাবে।

ম্যাসাজার

ঘরেই যখন বিউটি পার্লার

আকারে বেশ ছোট এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য ম্যাসাজ ডিভাইস। গাউসিয়া মার্কেটের ফেন্সি বিউটি কর্নারের বিক্রেতা সুমন আহমেদ জানান, কারো সাহায্য ছাড়া নিজেই ফেসিয়াল করা যাবে ডিভাইসটির সাহায্যে। ত্বকের নিচের পেশিগুলোকে উদ্দীপ্ত করে এটি ত্বকের গঠনকে আরো উন্নত করতে সাহায্য করে। সঙ্গে বাড়তি পাওনা ত্বকের উজ্জ্বলতা। ডিভাইসের সঙ্গে পাবেন একটি ব্রাশ সেট। প্রথমে ম্যাসাজ ক্রিম লাগিয়ে মেশিনটি দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ত্বক ম্যাসাজ করুন। এমনকি মেনিকিউর বা পেডিকিউর ম্যাসাজও এই একটি ম্যাসাজার দিয়েই করা যাবে। কেবল ব্রাশ বদলে নিলেই হলো। বিদ্যুতে বা ব্যাটারি-দুভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন। এ ধরনের মেশিনের কোনো রকমভেদে দাম ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা।

পেডিকিউর বোল

ঘরে বসে পেডিকিউর করার জন্য পাবেন পেডিকিউর বোল। কোনো সাধারণ বোল নয় এটি। পেডিকিউরের গরম পানি, পামস্টোন আর ম্যাসাজ-সব এই এক মেশিনেই হয়ে যাবে। দাম তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

স্টিম ক্যাপ

শুধু ত্বক নয়, স্টিম চুলের জন্যও বেশ উপকারী। এ জন্য পাবেন স্টিম ক্যাপ। বড় টুপির মতো দেখতে এই ডিভাইসে তামপাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। মাথায় তেল বা প্যাক লাগিয়ে স্টিম ক্যাপ পরে নিন। ব্যস, ইলেকট্রিসিটি অন করলেই হলো। গরম তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখার ঝামেলা পোহানো ছাড়াই তেল বা প্যাকের পরিপূর্ণ পুষ্টি পাবেন। স্টিম ক্যাপটি চাইলে গুনতে হবে ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা।

জেনে নিন

* ১৮ বছরের কম বয়সীরা এসব ডিভাইস ব্যবহার করবেন না।

* সন্তানসম্ভবা মায়েরাও এড়িয়ে চলুন।

* কেনার সময় ভালো করে ব্যবহারবিধি জেনে নিন।

দুইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরীর খবর: ইস্ট ওয়েস্ট নার্সিং কলেজ ও বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড

সংবাদপত্রে প্রকাশিত চাকরির খবর:

প্রতিষ্ঠানের নাম: ইস্ট ওয়েস্ট নার্সিং কলেজ

eastwest nursing8
পদের নাম: অধ্যক্ষ
পদ সংখ্যা: ০১ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: বি.এসসি নার্সিং, এমপিএইচ
অভিজ্ঞতা: নার্সিং কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও প্রশাসনিক দক্ষতা থাকতে হবে।

যা যা প্রয়োজন: আবেদনপত্রের সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সনদের ফটোকপিসহ আবেদন করতে হবে।
আবেদনের শেষ সময়: ২৪ আগস্ট ২০১৫

যার বরাবর আবেদন: চেয়ারম্যান, ইস্ট ওয়েস্ট নার্সিং কলেজ, তুরাগ, ঢাকা-১২৩০।

প্রতিষ্ঠানের নাম: বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড

Reshom1

পদের নাম: রেশম প্রতিপাদক, গ্রেড-১৫
পদ সংখ্যা: মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ০৯ জন, অন্যান্য ০৩ জন
শিক্ষাগত যোগ্যতা: বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ২ বছরের সার্টিফিকেট কোর্স পাস অথবা কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যা/প্রাণিবিদ্যায় স্নাতক।
বয়স: অনূর্ধ্ব ৩০ বছর, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর।
বেতন: সর্বসাকুল্যে ৮২০০ টাকা।
কর্ম এলাকা: যেকোনো জেলায় কাজ করতে হবে।

যা যা প্রয়োজন: আবেদনপত্রের ছক বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েব সাইট www.bsb.gov.bd থেকে সংগ্রহ করে আবেদন করতে হবে। পরীক্ষার ফি বাবদ প্রকল্প পরিচালক, বাংলাদেশে রেশম শিল্পের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড, রাজশাহীর অনুকূলে ১৫০ টাকার ব্যাংক ড্রাফটসহ আবেদন করতে হবে।

আবেদনের শেষ সময়: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

যার বরাবর আবেদন: প্রকল্প পরিচালক, বাংলাদেশে রেশম শিল্পের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা, বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড, রেশম ভবন, বালিয়াপুকুর, রাজশাহী।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২১ আগস্ট ২০১৫

কর্মস্থলে প্রথম দিনে কী করবেন

chakri1

শিক্ষাজীবন শেষে জীবিকার তাগিদে সবাইকেই কর্মজীবনে প্রবেশ করতে হয়। তবে খেয়াল রাখবেন, যেনো জীবনের প্রথম কর্মস্থলে গিয়ে কোনো সমস্যা বা বিপত্তির সম্মুখীন হতে না হয়। তাই জেনে নিন কর্মস্থলের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।

সময় মতো প্রবেশ:
কর্মস্থলে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো অফিসে সঠিক সময় মতো যাওয়া। দরকার হলে প্রথম দিন হাতে সময় নিয়ে একটু আগেই পৌঁছে যান।

পোশাক:
পোশাকের ক্ষেত্রে ফর্মাল হতে হবে। মেয়েরা দেশীয় পোশাক পরতে পারেন। তবে আগে থেকে যদি অফিসের কালচার সম্পর্কে জানা থাকলে ভালো হয়।

হাসিমুখে আলাপ:
সহকর্মীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলুন। তবে অতিরিক্ত বন্ধু ভাবাপন্ন ভাব না দেখানোই ভালো। তাদেরকে বোঝার চেষ্টা করুন।

কাজ বুঝে নিন:
আপনার কাজ ভালোভাবে বুঝে নিন। কাজ নিয়ে দ্বিধা থাকলে প্রশ্ন করতে ভুলবেন না।

বেশি কথা বলা যাবে না:
প্রথম দিন বেশি কথা না বলাই ভালো। গসিপ এবং পলিটিকসের মধ্যে যাবেন না। সবার কথা মন দিয়ে শুনুন।

হতাশ হবেন না:
প্রথম দিনই যে আপনি সব কাজ বুঝতে পারবেন তা নয়। তাই হতাশ হবেন না। হতাশ না হয়ে আপনার কাজ ভালোভাবে বুঝে নেয়া চেস্টা করুন।

প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জেনে নিন:
আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করবেন তার পরিবেশ, কাজের ধরন, বিভিন্ন বিভাগ, বার্ষিক রিপোর্ট, ইত্যাদি সম্পর্কে প্রথম দিনই জানার চেষ্টা করুন।

তর্ক করা যাবে না:
কারো সঙ্গে তর্কে জড়াবেন না। কোনো মন্তব্য পছন্দ না হলে সরাসরি তাকে না বলাই ভালো। তাতে আপনার সম্পর্কে ভুল মনোভাব সৃষ্টি হবে।

পরিপাটি থাকুন:
অফিসে আপনাকে অবশ্যই পরিপাটি থাকতে হবে। এ জন্য মেয়েরা হালকা প্রসাধন নিতে পারেন। তবে অতিরিক্ত মেকআপ নেবেন না। ব্যাগ ও জুতার ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখবেন যেন সেটা পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়।

ধন্যবাদ দিন:
প্রথম দিনে যারা আপনাকে সাহায্য করেছেন, অবশ্যই তাদের ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না।

কক্সবাজার ই-শপ.কম: অনলাইনে লিটনের শুঁটকি- বিশ্বের ১৩টি দেশে কক্সবাজারের শুঁটকি পাঠানোর উদ্যোগ

Shutki

লিটন দেবনাথ সৈকত। কক্সবাজার ই-শপ.কমের উদ্যোক্তা। তার সাইটের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে তিনি সারা দেশের শুঁটকি পৌঁছে দিয়ে অনেকের নজরে এসেছেন। প্রাথমিকভাবে বিশ্বের ১৩টি দেশে কক্সবাজারের শুঁটকি পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। সামুদ্রিক লইট্যা, ছুরি, কোরাল, রূপচাঁদার শুঁটকি ছাড়াও বার্মিজ আচার, চকলেট, আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, শামুক-ঝিনুকের তৈরি বিভিন্ন শোপিস, হরেক রকমের প্রসাধনী অনলাইনে অর্ডার নিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশী-বিদেশী ক্রেতার কাছে সরবরাহ করছেন লিটন

পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে সারাবছরই দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক ঘুরতে যান। ফেরার সময় সঙ্গে নিয়ে ফিরেন কক্সবাজারের শুঁটকি মাছ, বার্মিজ আচারসহ হরেক রকমের প্রসাধনী। যা কক্সবাজার ছাড়া পাওয়া দুষ্কর। এ চিন্তা থেকেই লিটনে ই-শপের যাত্রা শুরু। কারণ কক্সবাজার বেড়াতে এলেই পযর্টকদের খাবার প্লেটে পছন্দের রসনা হিসাবে এক নম্বরে থাকে সামুদ্রিক শুঁটকি। উপহার-উপঢৌকন হিসাবে শুঁটকি পাঠানোর রেওয়াজটা বেশ পুরনো। মজাদার খাবার হিসাবে শুঁটকির কদর আগে যেমন ছিল এখনও তেমন আছে। তাই কেউ কক্সবাজারে বেড়াতে এলে সবার আগে শুঁটকির খোঁজ নেয়। সেই শুঁটকির স্বাদ রসনা বিলাসীদের আরও কাছাকাছি নিতে কাজ করছে কক্সবাজার ই-শপ.কম নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের এই অনলাইন শপটি আপনি চাইলে আপনার দুয়ারে হাজির করবে পছন্দের সব শুঁটকি। সরাসরি উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে টাটকা এবং বিষমুক্ত শুঁটকি সংগ্রহ করে থাকে। এমনিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দুটি পণ্যের আলাদা বিশেষত্ব আছে। শুঁটকি ও বার্মিজ আচার। এই দুটি পণ্য কক্সবাজারের বাইরে সেভাবে পাওয়া যায় না। কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাওয়ার সময় কিছু শুঁটকি বা আচার নিয়ে যেতে পারলেও বরাবরই চাহিদা থাকে বেশি। এই চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে গত বছর জানুয়ারিতে কক্সবাজার ই-শপ ডটকমের যাত্রা। কক্সবাজার ই-শপ শুধু একটি ইকর্মাস উদ্যোগই নয়, এটি কক্সবাজারের পণ্য সারাদেশে পরিচিত করার একটি উদ্যোগ। ফরমালিন ও বিষাক্ত কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি ও টাটকা আচার মানুষের দুয়ারে হাজির করতে কক্সবাজার ইশপ কাজ করে যাচ্ছে।

কক্সবাজার ইশপে সামুদ্রিক লইট্যা, ছুরি, কোরাল, রূপচাঁদাসহ নানা শুঁটকি ছাড়াও আচার, চকলেট, আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, শামুক-ঝিনুকের তৈরি দৃষ্টিনন্দন অসংখ্য শোপিস অনলাইনে অর্ডার নিয়ে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এসব পণ্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্রেতাদের হাতে পৌঁছানো হচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকা ও চট্টগ্রামে ক্যাশ অন ডেলিভারি সার্ভিস চালু হয়েছে এবং অন্যান্য জেলায় পণ্য সরাসরি হোম ডেলিভারি যাচ্ছে। অনলাইনে কেনাকাটার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টার্মের একটি রিটার্ন পলিসি। কক্সবাজার ই-শপ দিচ্ছে প্রডাক্ট রিটার্ন-এর সহজ সুযোগ। ক্রেতারা চাইলে তাদের কেনা পণ্য ঢাকা ফার্মগেট ও কক্সবাজারের নিজস্ব অফিস থেকে নিতে পারেন। কক্সবাজার ই-শপের উদ্যোক্তা লিটন বলেন, সব মিলিয়ে কক্সবাজারে দোকান থেকে শুঁটকি কেনার চেয়ে কক্সবাজার ই-শপ থেকে অনলাইনে কেনা অনেক সাশ্রয়ী ও নির্ঝঞ্ঝাট। কক্সবাজার ই-শপ সরাসরি মাঠ পর্যায় থেকে শুঁটকি সংগ্রহ করে। এ কারণে ক্রয়মূল্য কম পড়ে। আর দোকানে বিক্রি হওয়া শুঁটকি কয়েক হাত বদল হয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাজারে পৌঁছতে কেজিতে দাম বেড়ে যায় ১০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। আর এই টাকা যায় ক্রেতাদের পকেট থেকে। কক্সবাজারে নতুন পর্যটক দেখলে অনেকে আবার দাম বাড়িয়ে রাখে। কক্সবাজার ই-শপ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এক দামে পণ্য বিক্রি ও স্বল্প খরচে কুরিয়ারে হোম ডেলিভারি দেয়া হয়।

কক্সবাজারের সবচেয়ে মজাদার রূপচাঁদা শুঁটকির কেজি মানভেদে ১২শ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। লইট্ট্যা শুঁটকি ৬শ-৭শ টাকা, ছুরি শুঁটকি মানভেদে ৩শ থেকে ১৬শ টাকা । এর সঙ্গে কুরিয়ার সার্ভিসের খরচ ৬০ টাকা। ক্যাশ অন ডেলিভারি হলে ৯০ টাকা। তারপরও তাদের দাম বাজারের শুঁটকির চেয়ে কম। কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে কক্সবাজারের পণ্যের চাহিদা বেশ। বেড়াতে গিয়ে কেনাকাটার ঝামেলা অনেকেই পোহাতে চাননা। আবার কেনাকাটা করলেও পরবর্তিতে কক্সবাজার চাইলেও হাতের কাছে পণ্যগুলো পাওয়া যায় না। কেনার সময় পান না। কারণ যখন পণ্য প্রয়োজন হয়- তখন তারা কক্সবাজারে আসতে পারে না। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে পণ্য বিপণনে নতুনত্ব এনেছে কক্সবাজার ই-শপ। নিজের উদ্যোগের পেছনের গল্প উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি জানান, ২০০৫ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাসের পর পারিবারিক সংকটে লিটন দেবনাথের লেখাপড়ায় ছেদ পড়ে। ডাক্তারের সহকারী হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন। ওই সময় সাইবার ক্যাফেতে ইউটিউব ও অন্যান্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কম্পিউটারের কাজ শেখেন। ২০০৭ সালে একটি কম্পোজের দোকান দিয়ে শুরু হয়ে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগ। ব্যবসার পাশাপাশি চলে ফ্রিল্যান্সিং। ২০১০ সালে তিনি দাঁড় করান কক্সবাজারের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক অন্যতম প্রতিষ্ঠান ওয়েব আর্ট আইটি। কয়েকজন ডেভেলপার নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এখানেই থেমে থাকতে চাননি লিটন। কক্সবাজারে আসা পর্যটক ও তাদের চাহিদার কথা চিন্তা করে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কক্সবাজার ই-শপ।

লিটন কক্সবাজার ই-শপ.কমকে যুক্ত করেছেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সঙ্গে। এছাড়া গত ১০ এপ্রিল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব গ্রুপের নবীন উদ্যোক্তা স্মারক-২০১৪ পেয়েছেন লিটন দেবনাথ। কক্সবাজার ই-শপ নিয়ে লিটন দেবনাথের পরবর্তী লক্ষ্য হল বিদেশে পণ্য পাঠান। এই লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন তারা। প্রাথমিকভাবে বিশ্বের ১৩টি দেশে কক্সবাজারের শুঁটকি পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। লিটন দেবনাথের মতে, ই-কমার্স নিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা পুঁজি ও কাজ করার ক্ষেত্র। উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় সরকার ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে দেশই লাভবান হবে। ভারতে ই-কমার্স নিয়ে অনেক উদ্যোক্তা বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত এই খাতের সহযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। এছাড়া কক্সবাজার ই-শপ ডটকম থেকে কেন ক্রেতারা পণ্য কিনবে তার জন্য দিচ্ছে একাধিক সুবিধা। রয়েছে ক্যাশ অন ডেলিভারি, বিকাশ, ব্যাংক ট্রান্সফার, গিফট ভাউচার ইত্যাদি। ক্রেতাদের সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের জন্য রয়েছে হেল্পলাইন। এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইট : www.coxsbazareshop.com এবং ফেসবুক পেজ : www.facebook.com/coxsbazarEshop ঠিকানায়।

হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য সতর্কতা ও করণীয়

– ডা. এম এ মুমিত আজাদ

Hazz

ভৌগোলিক, জলবায়ুয় ও আবহাওয়াগত পরিবর্তনে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হযাত্রীদের বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত অসুবিধা দেখা যায়।

ভ্রমণকালীন সমস্যা : হজযাত্রীরা সাধারণত বিমান ভ্রমণে অনভ্যস্ততার কারণে বমি, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের সমস্যায় ভুগে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে বিমান সুউচ্চ পর্বত ও মেঘমালা এড়ানোর জন্য ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক উচ্চতা অতিক্রম করে (প্রায় ৬০০০-৮০০০ ফুট ওপর দিয়ে) চলতে হয়। তখন ঊর্ধ্বাকাশে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের চাপ কম থাকায় রক্তের অক্সিজেনের মাত্রা নিচে নেমে আসে। ফলে অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসকষ্ট এবং তীব্র মাথাব্যথা অনুভূত হয়।

তাপমাত্রার পার্থক্য : জেদ্দা বিমানবন্দরে নামার পর পরই আবহাওয়াগত পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। আমাদের দেশের তাপমাত্রার সঙ্গে মরু অঞ্চলে তাপমাত্রার ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় জলীয়বাষ্পের আর্দ্রতায় একটা ভারসাম্য রয়েছে। অন্যদিকে সৌদি আরবের তাপমাত্রা সাধারণত ৪০-৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়ে থাকে, সেই সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আর্দ্রতাও কম থাকে। অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোক হতে পারে। সঙ্গে ডায়রিয়া, বমি ও মাত্রারিক্ত ঘামে ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। ফলে শরীর থেকে লবণ বের হয়ে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য ঠিক থাকে না। এর ফলে শারীরিক দুর্বলতা, মাথাব্যথা, স্ট্রেস ও ঝিমুনি ও বমি বমি ভাব হতে পারে। তাছাড়া পানি শূন্যতায় গাঢ় হলুদ বর্ণের মূত্র নিঃসরণ হতে পারে।

ত্বকের সমস্যা : সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে লাগায় এর ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাবে মুখমণ্ডল, বাহু ও বুকের চামড়ায় সানবার্ণ হতে পারে।

সংক্রমণ ব্যাধি : পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লোকজন একত্রে ঘন পরিবেশে বসবাস, বাতাসে হাঁচি-কাশি এবং হাতের স্পর্শে বিভিন্ন ফ্লুর সংক্রমণ ঘটতে পারে। কখনও কখনও তা মহামারী আকারে ছড়াতে পারে। সাধারণত ম্যানিনগোকক্কাল ইনফেকশন, হেপাটাইটিস-এ এবং হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস, মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড ফিভার, ইয়েলো ফিভার, ম্যালেরিয়া জ্বর এবং ১৫ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে পোলিও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

টনসিলাইটিস ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ : অতিরিক্ত গরমে ডিপ ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি পানে গলা বসে যাওয়া, গলাব্যথা ও টনসিলাইটিস এমনকি ঊর্ধ্ব শ্বাসনালীতে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। এছাড়া শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ যেমন- একিউট ও ক্রোনিক ডিজঅর্ডার দেখা দিতে পারে। স্থান ও পরিবেশগত পার্থক্যের জন্য ঠাণ্ডাজ্বর ও ইনফ্লুয়েঞ্জাও আক্রমণ করতে পারে।

আন্ত্রিক রোগ : খাদ্যাভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য পাকস্থলী ও অন্ত্রের নানাবিধ সমস্যা হয়ে থাকে। সাধারণত হাইপার অ্যাসিডিটি, ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠবদ্ধতা, আমাশয়, পাতলা পায়খানা এবং ট্যাপের পানি ও অসিদ্ধ খাবার গ্রহণের ফলে টাইফয়েট ও প্যারা-টাইফয়েড ফিভার, সংক্রমণ হতে পারে। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বয়স্ক হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ শতাংশই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। প্রয়োজনীয় পরিমাণে ফলমূল এবং শাকসবজি না খেয়ে কেবল প্যাকটজাত খাবার গ্রহণ করায় কোষ্ঠকাঠিণ্য একটি অতি সাধারণ সমস্যা হিসেবে দেখা যায়।

ট্রমা বা আঘাত : হজের অষ্টম ও নবম দিবসে হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম ও অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। অষ্টম দিবসে বিশেষ করে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে যাত্রাকালে অতিরিক্ত গরম, কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ ও ভিড়ের মধ্যে যাত্রাকালে আঘাত মাথাব্যথা, বমি ভাব বিশেষ করে বয়স্ক ও বাতের রোগীদের অতিরিক্ত হাঁটা-চলার কারণে বাতব্যথা বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া হেরেম শরিফ তাওয়াফ করার সময় হুড়োগুড়িতে আঘাত লাগতে পারে।

বয়স্ক ও জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে : বয়স্ক ব্যক্তি, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য জটিল রোগীরা অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিতে নানা রকম শারীরিক জটিলার শিকার হয়। অনেকের ক্ষেত্রে হাইপো ও হাইপার গ্লাইসোমিয়া দেখা দেয় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে জটিলতার কারণে রোগী কোমায় চলে যায়।

করণীয় : প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রস্তুতি নেয়া জরুরি। প্রত্যেক হজযাত্রীর বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধির জন্য ভ্যাকসিন গ্রহণ ও নিজ উদ্যোগে ফার্স্ট এইড প্যাকেজ সংগ্রহ এবং একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সাধারণ রোগের ওষুধগুলো ভ্রমণকলে সঙ্গে রাখতে হবে।

ফার্স্টএইড চিকিৎসা : ড্রেসিং করার জন্য সব উপাদান, বিষাক্ত পোকামাকড়ের জন্য অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম, পানি পরিশোধনের জন্য জীবাণুমুক্ত ট্যাবলেট সঙ্গে রাখা প্রয়োজন।

পানি ও লবণের সাম্যতা : অতিরিক্ত ঘামে ইলেকট্রলাইটের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সল্ট ট্যাবলেট নিতে হবে। এটি পাওয়া না গেলে বিকল্প হিসবে সারা দিনের জন্য দুই টেবিল চা চামচ সাধারণ লবণ খাবার পানির সঙ্গে ব্যবহার করা প্রয়োজন। আরবে প্রাপ্ত লাবান (মাঠা) এ ক্ষেত্রে উপকারী।

জ্বর ও মাথাব্যথায় : জ্বর ও সাধারণ ব্যথাজনিত কারণে প্যারাসিটামল ও ক্যাফেইনযুক্ত অ্যান্টিপাইরেটিক ও এনালজেসিক ওষুধ সঙ্গে রাখা দরকার।

টনসিলের ব্যথায় : টাণ্ডাজনিত গলাব্যথা ও টনসিলের ব্যথার জন্য জিঙ্গার বা শুকনো আদার চা অথবা গরম পানির গড়গড়ায় উপকারী ফল পাওয়া যায়।

ট্রমা : আঘাতজনিত ব্যথায় ডাইক্লোফেন বা এসিক্লোফেনযুক্ত ওষুধ এবং আক্রান্ত স্থানে লাগানোর জন্য ব্যথানাশক জেল সঙ্গে রাখা।

পেটের পীড়ায় : পাতলা পায়খানা ও আমাশয় হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওরাল রিহাইড্রেশন স্যালাইন বা খাওয়ার স্যালাইন এবং সঙ্গে মেট্রোনিডাজলযুক্ত ওষুধ ও পেটের অতিরিক্ত অম্লতার জন্য ডমপেরিডন সংগ্রহে রাখা।

শ্বাসকষ্টে : হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগীদের জন্য সালবিউটামল সালফেটযুক্ত ব্রংকোডায়ালেটর ওষুধ ট্যাবলেট উপকারী।

অতিরিক্ত অম্লতায় : হাইপার অ্যাসিডিটি বা অম্লাধিক্যের জন্য অ্যালুমিনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেটযুক্ত চুয়েবল এন্টাসিড ট্যাবলেট সঙ্গে রাখা ভলো। অবিরত অ্যাসিডিটির সমস্যায় চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে রেনিটিডিন, ওমিপ্রাজল অথবা প্যান্টোপ্রাজলযুক্ত ওষুধ সঙ্গে রাখা যেতে পারে।

অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় : ধুলোবালু, ডাস্ট ও মাইট দ্বারা আক্রান্ত হলে সেটিরিজিনযুক্ত অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেট উপকারী।

পরামর্শ ও সতর্কতা : ফুসফুসের রোগ, যারা নিউমোথোরাক্স রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বিমানে পরিভ্রমণ অনুচিত। ঊর্ধ্বাকাশে বিমান পরিভ্রমণকালে অক্সিজেনের স্বল্পতায় হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে তীব্র শ্বাস কষ্ট হয়, তাই ইনহেলার অবশ্যই কাছে রাখতে হবে। ডিহাইড্রেশন ও কোষ্ঠবদ্ধতা এড়ানোর জন্য প্রতি দু-তিন ঘণ্টা পর পর পানি পান করতে হবে। বদহজমজনিত সমস্যায় কারমিনেটিভ জাতীয় ওষুধ সেবন করা। সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে না লাগানো, একটানা দীর্ঘক্ষণ না হেঁটে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে হাঁটা, অত্যাধিক জনবহুল পরিবেশ এড়িয়ে চলা, প্রয়োজন অনুপাতে, বিশ্রাম ও ঘুমানো।

শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য শীতল খাদ্যদ্রব্য ও প্রচুর পানি পান করা। সুর্যের ভয়াবহ তাপ ও ক্ষতিকর আলোকরশ্মি থেকে ত্বক রক্ষা করার জন্য মুখের ওপর সাদা কাপড়, সানস্ক্রিন লোশন ও ছাতা ব্যবহার করা। নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। চশমা বা কন্ট্রাক্ট লেন্স ব্যবহার করলে সতর্কতামূলক আরও একটি সঙ্গে নেয়া ভালো। পুরুষের ক্ষেত্রে মাথা মুণ্ডণকালীন একই ব্লেড বিভিন্ন জনে ব্যবহার করায় হেপাটাইটিস-বি ভাইসরা সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাই অন্যের ব্যবহৃত রেজার বা ক্ষুর-ব্লেড ব্যবহার না করা। হ্যান্ড-লাগেজ, পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং সরঞ্জামাদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা। ভ্যালিড ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স কার্ড থাকলে তা সঙ্গে রাখতে হবে। একাকী রাস্তায় না বেরিয়ে গ্রুপভিত্তিক চলাচল করা, বিশেষ করে ট্রাফিক আইন মেনে চলা।